“ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি, ইউসুফের মায়ের লাশ খাটের ওপর পড়ে আছে। আর ইউসুফের ছেলে আরাফাত ও মেয়ে হালিমা আহত অবস্থায় নিচে পড়ে আছে।”
Published : 28 May 2024, 10:16 AM
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় এক প্রবাসীর মা ও তার ছেলেকে বাড়ির ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ওই বাড়িতে ডাকাত ঢুকেছিল বলে তারা খবর পেয়েছিল। পরে সেখান থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় আরও একজন।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, সোমবার রাতে উপজেলার ২ নম্বর বাকিলা ইউনিয়ন পশ্চিম রাধাসার গ্রামের বকাউল বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে তারা খবর পান। রাতেই প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টির মধ্যে তারা ঘটনাস্থলে যান।
তবে ওই বাড়িতে ডাকাতি হয়েছিল কী-না সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি এ পুলিশ কর্মকর্তা।
নিহতরা হলেন-বকাউল বাড়ির প্রবাসী ইউসুফের ছেলে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত (১২), তার দাদি হামিদা (৭০)।
ইউসুফের মেয়ে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হালিমাকে (১৪) কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। প্রথমে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পশ্চিম রাধাসার গ্রামের খান বাড়ির বাবলু বলেন, “রাত সাড়ে ১২টার দিকে ইউসুফের স্ত্রী শাহিন আমাকে ফোন করে জানান যে, তাদের বাড়িতে ডাকাত ঢুকে অনেককে কুপিয়েছে। পরে স্থানীয় মসজিদের মাইকে বকাউল বাড়িতে ডাকাত ঢুকেছে বলে প্রচার করা হয়।
“পরে আমিসহ কয়েকজন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি, ইউসুফের মায়ের লাশ খাটের ওপর পড়ে আছে। আর ইউসুফের ছেলে আরাফাত ও মেয়ে হালিমা আহত অবস্থায় নিচে পড়ে আছে। তাদের শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে।”
তিনি বলেন, এরপর স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ও অন্যদের সহযোগিতায় আহতদের কাঁধে করে রাস্তায় এনে পাশের বাড়ি থেকে অটোরিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আসার পথেই আরাফাত মারা যায়।”
“আরাফাতের বোন হালিমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে বলে শুনেছি। তার পিঠে ও বুকে কোপ দেওয়া হয়েছে।”
অটোরিকশা চালক জহির বলেন, “রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। আনুমানিক সাড়ে ১২টার পরে আরাফাত ও তার বোন হালিমাকে আহত অবস্থায় আমার বাসায় নিয়ে আসে স্থানীয়রা। পরে আমার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা করে তাদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই।”
বকাউল বাড়ির সাহাবুদ্দিন বলেন, “ফোনে আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমার কাছে ডাকাতির ঘটনার পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে যাই। ফাতেমা জানান, ডাকাত দল তার ঘরেও তালা ভেঙে প্রবেশ করেছেলি। এ সময় তিনি অন্য একটি রুমের দরজা আটকে বিভিন্ন জনকে ফোন করে বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে বলে জানাচ্ছিল। ডাকাতদল কালো বোরকা পরা ছিল।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি আবদুর রশিদ বলেন, পুরো ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।