ছেলে সাত্তার মিয়া বলেন, “বাবা আমার পরিবারকে আলাদা করে দিয়েছিল। টাকা পয়সা দিতেন না। আমি ঠিকমতো সংসার চালাতে পারি না।”
Published : 24 Sep 2024, 02:47 PM
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় বৃদ্ধকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ টয়লেটের কুয়োয় লুকিয়ে রাখার অভিযোগে তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের মঙ্গলহোড় গ্রাম থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন দেলদুয়ার থানার ওসি সোহেব খান।
নিহত ৭৫ বছর বয়সী শামসুল মিয়া পেশায় একজন দলিল লেখক ছিলেন। শামসুল মিয়ার স্ত্রী মারা গেছেন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। একমাত্র ছেলে সাত্তার মিয়া (৪০) বেকার ছিলেন। আর মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় স্বামীর বাড়িতে থাকে।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, শুক্রবার রাত থেকে শামসুল আলম নিখোঁজ ছিলেন। একইসঙ্গে সাত্তার মিয়াও বাড়িতে ফিরছিলেন না। পরে স্থানীয়রা সাত্তারকে ফোনে বাড়ি ডেকে এনে আটক করার পর তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে তার বাবার লাশের সন্ধান মেলে।
সাত্তারের চাচাতো ভাই লেবু মিয়া বলেন, “চাচাকে শনিবার থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। একমাত্র চাচাতো ভাইও উধাও ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পর চাচাকে না পেয়ে আমরা সোমবার দেলদুয়ার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
“পরে রাতে সাত্তারের ফোন খোলা পেয়ে আমরা তাকে বাড়ি আসতে বলি। সে আসলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে নিজেদের টয়লেটের কুয়ার ভেতরে উল্টো করে রাখা আমার চাচার লাশ পাওয়া যায়।”
পরে খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে সাত্তারকে আটক করে দেলদুয়ার থানায় নিয়ে যান।
সাত্তার মিয়া বলেন, “বাবা আমার পরিবারকে আলাদা করে দিয়েছিল। টাকা পয়সা দিতেন না। আমি ঠিকমতো সংসার চালাতে পারি না।
“এর মধ্যে শনিবার রাত ২টার সময় আমার ক্ষুধা লাগলে আমি আমার আব্বার ঘরে যাই। তখন আব্বা আমাকে জিজ্ঞেস করে ‘ঘরে কেন এসেছিস’। এ সময় তর্কাতর্কি হলে আমি আব্বার ওপরে উঠে বসি এবং হাত দিয়ে গলা চেপে ধরি।”
“অনেক ধস্তাধস্তির পর একটি ওড়না দিয়ে তার গলায় বেধে ফেলি। পরে তার লাশ টয়লেটের কুয়ার মধ্যে রেখে আমি পালিয়ে যাই।”
ওসি সোহেব খান বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বৃদ্ধের ছেলে সাত্তারকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞেসাবাদের পর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা যাবে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।