রংপুর মেডিকেলের উপাধ্যক্ষ বলেন, “সকালে ডরমিটরি থেকে জানানো হয়, ওই রুম থেকে গন্ধ আর রক্ত বের হচ্ছে। পরে বিষয়টি আমরা পুলিশ ও জেলা প্রশাসককে জানাই।”
Published : 02 Jul 2024, 07:31 PM
রংপুর মেডিকেল কলেজের আবাসিক ভবন থেকে এক চিকিৎসকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের শেখ রাসেল পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডরমিটরি ভবনের ষষ্ঠ তলার ৬-এফ কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) মো. আরিফুজ্জামান জানান।
নিহত মো. আখতারুজ্জামান (৫২) নীলফামারী সদর উপজেলার প্রতিভা নীলপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে।
রংপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহফুজুর রহমান জানান, আখতারুজ্জামান ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার, রংপুর মেডিকেল কলেজে পোস্ট গ্রাজুয়েটের শিক্ষার্থী। তিনি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য তিনদিন আগে রংপুর এসেছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে ডরমেটরির ওই কক্ষ থেকে রক্ত গড়িয়ে দরজার বাইরে বের হতে দেখে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মিলনুর রহমান মিলন পুলিশকে জানান।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে ওই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করে।
দুই বিয়ে করা আখতারুজ্জামানের বড় স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও ছোট স্ত্রী কোহিনুর আক্তার।
রংপুর নগরীর ধাপ শিমুলবাগ এলাকার কোহিনুর আক্তার বলেন, “আমার সঙ্গে তিনদিন আগে মোবাইল ফোনে আখতারুজ্জামানের কথা হয়েছে। তখন উনি গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে ছিলেন। উনি প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। এর মধ্যে কবে উনি রংপুরে এসেছেন, সেটা আমি জানতাম না।
“মঙ্গলবার দুপুরে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে এসেছি। তবে এখন পর্যন্ত বলতে পারছি না, কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।”
কোহিনুর আরও বলেন, “আমি তো জানতাম, উনি ঢাকার বাসিন্দা কিন্তু পরে জেনেছি, নীলফামারী ওনার জন্মস্থান। ঢাকা এবং নীলফামারীর ঠিকানায় ওনার দুটি এনআইডি কার্ড রয়েছে। আমি ওনার দ্বিতীয় স্ত্রী, আমার কোনো সন্তান নেই। আমাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল না। উনার প্রথম স্ত্রীর সংসারে তিন সন্তান রয়েছে।”
নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী জানান, বারবার পরীক্ষা দিয়েও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করতে পারছিলেন না আখতারুজ্জামান। তার নবমবার পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তিনি লিভার ও পায়ের ব্যথাসহ কয়েকটি রোগেও ভুগছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছিলেন চিন্তিত।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান বলেন, “ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
রংপুর মেডিকেলের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, “সকালে ডরমিটরি থেকে জানানো হয়, আক্তারুজ্জামানের রুম থেকে গন্ধ আর রক্ত বের হচ্ছে। পরে বিষয়টি আমরা পুলিশ ও জেলা প্রশাসককে জানাই। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কক্ষের দরজার তালা ভেঙে তার লাশ পাওয়া যায়। তবে মৃত্যুর ব্যাপারে ধারণা করে কিছু বলা যাচ্ছে না।”