“বাচ্চার জন্মের পরে যে পোশাক উপহার দিয়েছিলাম, সেই পোশাকেই তার লাশ দেখতে পেয়েছি,” বলেন নবজাতকের বাবা।
Published : 20 Jan 2025, 08:33 PM
নদীতে ফেলে দেওয়ার পাঁচ দিন পর ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর তীর থেকে সেই নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকালে উপজেলার চর বারইকরণ এলাকার সুগন্ধা নদীর তীর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয় বলে নলছিটি থানার ওসি আবদুস সালাম জানান।
পুলিশ পরিচয় শনাক্ত করতে না পারলেও শিশুটির বাবা সোহেল আহমেদ বলেন, পাঁচ দিন আগে নদীতে ফেলে দেওয়া তার সন্তানের মরদেহই এটি।
কীভাবে নিশ্চিত হলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা বাচ্চার জন্মের পরে যে পোশাক উপহার দিয়েছিলাম, সেই পোশাকেই তার লাশ দেখতে পেয়েছি।”
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সোহেল আহমেদের সঙ্গে দেড় বছর আগে ঝালকাঠি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ঐশি আক্তারের বিয়ে হয়। দূরে চাকরি করা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ ছিল সোহেলের। এ অবস্থার মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হলে বাচ্চা নষ্ট করার ও সোহেল আহমেদকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করার হুমকি দেন ঐশি। বেশ কয়েকবার বাচ্চা নষ্ট করতে গিয়েও ব্যর্থ হন।
গত ৯ জানুয়ারি বরিশাল নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে একা এসে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হলে পরে স্বজনরা তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ১০ জানুয়ারি অস্ত্রোপচার ছাড়াই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ঐশি। এরপর তাকে বরিশাল নগরীর আলেকান্দা এলাকায় বোনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে বাসার কাউকে কিছু না জানিয়ে বাচ্চা নিয়ে বের হয়ে একা ফিরে আসেন ঐশি।
শিশুর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ঐশি প্রথমে জানান, সন্তানকে সেতু থেকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন।
তখন নবজাতকের মামা মো. মাসুদ জানিয়েছিলেন, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা ও বিষন্নতায় ভুগছেন। এ জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার পাঁচ দিন পর সুগন্ধা নদীর তীর থেকে নবজাতককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হল।
বরিশাল মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই ইব্রাহিম বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে শিশুটির বাবার পরিবার আগে থেকেই থানায় অভিযোগ দেয়। পাওয়া লাশের ডিএনএ টেস্ট করা হবে।
এ ছাড়া বরিশালের একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন শিশুটির মাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।