ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ফেনী মডেল থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে।”
Published : 20 Aug 2024, 09:00 PM
ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে গণহত্যার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে।
নিহত ওয়াকিল আহমেদ শাকিবের মা মাহফুজা আক্তার বাদি হয়ে মঙ্গলবার বিকালে ফেনী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন বলে থানার ওসি মো. রুহুল আমিন জানান।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) দীন মোহাম্মদ বলেন, “ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ফেনী মডেল থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে।”
মামলায় ফেনী-১ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফেনী-৩ সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীসহ আসামি করা হয়েছে ১৫১ জনকে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১৫০ জনকে।
মামলার বরাতে ওসি বলেন, “গত ৪ অগাস্ট দুপুরে মহিপালে আন্দোলনে অংশ নেয় সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা মোবাইল টেকনেশিয়ান ওয়াকিল আহমেদ শাকিব। সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরতদের ওপর গুলি ছুঁড়লে শাকিবের কপালে গুলি লাগে। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।”
ঘটনার দিন আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর পরিকল্পনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তল, বন্দুক, রাইফেল, শটগান, একে ৪৭ রাইফেল, এম-১৬ গান, ধামা, তলোয়ার ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে আন্দোলনরতদের ওপর হামলা চালায় বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজহারে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতন, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদারের নাম রয়েছে।
এছাড়া ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করিম উল্যাহ, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদারকেও এ মামলার আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ মিলন, শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা, ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন, ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমেদ মুন্সী, লেমুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাসিম, ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাকা, কাজিরবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগ, ফেনী পোৗরসভার কাউন্সিলর খালেদ খান, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আহমেদ রিয়াদ আজিজ রাজিবের নাম রয়েছে।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) দীন মোহাম্মদ বলেন, “এসব মামলায় এজহার নামীয় প্রায় নয়শ জনসহ মোট ১ হাজার ৯২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
“এদের মধ্যে ফেনী-২ আসনের সাবেক সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর পিএস পরিচয় দেওয়া মানিক নামে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে।”