জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও পাল্টা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
Published : 11 Jun 2024, 10:12 PM
যশোরে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে এক সরকারি কৌঁসুলি-পিপিকে মারধরের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ দুজনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম গোলাম কিবরিয়ার আমলি আদালতে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল অভিযোগটি দায়ের করেন বলে আইনজীবী সৈয়দ কবির হোসেন জনী জানান।
জনী বলেন, আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, তিনি আদালতে থেকে এমন কোনো নির্দেশনা এখনও পাননি।
পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল আদালতে করা অভিযোগে উল্লেখ করেন, জেলা আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় ভবনের সামনের ফুটপাতে কিছু বিক্রেতা টেবিল পেতে কাপড় বিক্রি করেন। সেখানে এক বিক্রেতাকে জোর করে উঠিয়ে নতুন একজনকে বসান শাহীন নামে এক ব্যক্তি।
এ সময় শাহীন অন্য বিক্রেতাদের উদ্দেশে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্দেশে তিনি এ টেবিল বসিয়েছেন। এটি কেউ ওঠালে তার হাত কেটে নেওয়া হবে। এ নিয়ে দোকানিদের একটি পক্ষ স্থানীয় পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেন।
গত রোববার রাতে ওই ফাঁড়ির এসআই হেলাল বিষয়টির মীমাংসার জন্য শাহীনসহ অন্য ব্যবসায়ীদের ফাঁড়িতে ডাকেন। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকেও ফাঁড়িতে ডেকে নেওয়া হয়।
আদালতে দায়ের করা পিপির অভিযোগে আরও বলা হয়, কিন্তু হঠাৎ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন একদল যুবক নিয়ে ওই ফাঁড়িতে যান।
তিনি মুস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে ‘ধান্দাবাজ’ আখ্যা দিয়ে মারপিট শুরু করেন। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে মুকুলকে হত্যারও হুমকি দেন শহিদুল।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম।
সেখানে তিনি দাবি করেন, পিপি মোস্তাফিজুর মুকুল ফুটপাতের দোকানদারদের কাছ থেকে ‘হিস্যা’ নেন। ওই ফুটপাতে শাহীন নামে তার এক কর্মী দোকান দিতে গেলে তাকে বাধা দেন। পরে পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেওয়া হয়।
শহিদুল ইসলাম বলেন, “আমি শাহীনকে পুলিশ ফাঁড়িতে যেতে বলেছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর পিপি মুকুল আমার কর্মী শাহীনকে বেদম মারপিট করেছেন।
“খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই। থানার ওসি ফোন করে জানান, যা হওয়ার হয়েছে; বিষয়টি আমরা দেখছি। এরপর সেখান থেকে চলে আসি। আমি মুকুলকে মারপিট করিনি।”
মুকুল দোকানদার শাহীনকে মারপিট করেছে; তার চিকিৎসা সনদ আছে দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরও বলেন, “পিপি মুকুল আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে আমরাও পাল্টা মামলা করব।”
এসময় সংবাদ সম্মেলনে দোকানদার শাহীনও ছিলেন। তিনি তাকে মারপিটের বর্ণনা দেন।
এদিকে, পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা।
তারা এ ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।