“আজও অনেকেই বাড়ি ফিরছেন, তাদের স্বস্তি একটু বেশি৷”
Published : 10 Apr 2024, 12:37 PM
ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গত দুদিন মানুষের ঢল নেমেছিল। গাড়ির ধীরগতি আর যানজটের ভোগান্তি মাথায় নিয়েই পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি গেছেন অনেকে। তবে মঙ্গলবার রাত থেকে স্বস্তি ফিরেছে মহাসড়ক দুটিতে।
বুধবার সকাল থেকে দৃশ্যপট পুরো পাল্টে গেছে; এদিন যারা এই দুই মহাসড়ক হয়ে বাড়ির পথ ধরেছেন, তাদের যাত্রা হয়েছে পুরোপুরি ‘স্বস্তিতে’।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এখন যাত্রীদের থেকে বাসই বেশি। বাসের চালক ও সহযোগীরা বলছেন, যাত্রী ‘অল্প’, তাই বাস ভরছে না। আর রাস্তায় যেহেতু লোকজন হাতেগোণা, তাই যাত্রীর জন্য তাদের অপেক্ষা দীর্ঘ হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় অন্যান্য সময় গাড়ির জটলা লেগেই থাকে। কিন্তু সকাল থেকে একেবারেই ফাঁকা ছিল। বাসস্ট্যান্ডে ঘরমুখো যাত্রীদের অল্প জটলা দেখা গেছে; পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রী তুলতে হাঁকডাক করছেন ৷ অতিরিক্ত ভাড়ার বিড়ম্বনাও ছিল না এদিন।
এ মহাসড়কে বিপুল পরিমাণ গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে, যা যাত্রীর তুলনায় `অনেক বেশি'৷
স্বাভাবিক সময়ের গাড়ি আর মানুষের ভিড় একেবারেই চোখে পড়েনি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায়। চন্দনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভারের নিচে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা গাড়িগুলো তুলনামূলক অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে। যাত্রী নামিয়ে বাসগুলো আবার উত্তরবঙ্গের দিকে যাত্রী তোলার জন্য পার্কিং করছে। ফলে সেখানে কিছু গাড়ির জটলা তৈরি হয়েছে।
চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় কথা হয়, যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা ‘সৌখিন পরিবহন’ বাসের সহকারী আবু তাহেরের সঙ্গে। তিনি বলেন, “আজকে তো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ফাঁকা; যাত্রী নাই বললেই চলে। ভাড়া কম চেয়ে ডেকেও যাত্রী পাচ্ছি না।”
হাইওয়ে পুলিশ বলছে, গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ি, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা, জৈনাবাজার ও গাজীপুর মহাগরের চান্দনা-চৌরাস্তা স্টেশন রোড, চেরাগআলী, বোর্ডবাজার, সাইনবোর্ড এলাকায় সোমবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যানবাহনের বেশ চাপ ছিল। কোথাও কোথাও দীর্ঘ যানজট তৈরি হওয়ায় ভোগান্তি বাড়ে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। তবে বেলা ১২টার দিকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের চাপ স্বভাবিক হতে থাকলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমতে শুরু করে। রাতের দিকে ভোগান্তি অনেকটাই কমে যায়। তবে বুধবার সকাল থেকে মহাসড়ক একেবারে ফাঁকা হয়ে পড়ে।
চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় কথা হয় জাকির হোসেন নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। সকালে পরিবার নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। সড়ক ফাঁকা দেখে স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি।
জাকির বলেন, “টাঙ্গাইল মহাসড়ক একদম ফাঁকা। দেখে ভালো লাগছে। পরিবহন শ্রমিকরা গাড়িতে ডেকে ডেকে যাত্রী উঠাচ্ছেন, ভাড়াও কম হাঁকছেন।
“সাধারণ সময়েও এতো ফাঁকা থাকে না৷ বুধবার যারা বাড়ি যাচ্ছেন তারা সবচেয়ে আরামে যেতে পারছেন ।”
ঢাকা-টাঙ্গাইল নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, এ মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় মঙ্গলবার বিকাল থেকেই স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলছে। আর সকাল থেকে তো কোনো ভোগান্তিই নেই।
“আজও অনেকেই বাড়ি ফিরছেন, তাদের স্বস্তি একটু বেশি৷ সবার ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে পুলিশ দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।”
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলছেন,“ গাজীপুরে মহানগর এলাকার সড়ক মহাসড়কগুলোতে ঘরমুখো মানুষ একেবারে নেই বললেই চলে। আর গাড়ির চাপ তো অন্য সাধারণ দিনের চেয়ে অনেক কম।
“কোথাও যানজট নেই। গাড়ি চলছে স্বাভাবিক গতিতে।”