“সন্ধ্যার পর থেকে কনকনে শীত পড়তে থাকে। উপায় না পেয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে ঠান্ডা কমানোর চেষ্টা করি।”
Published : 27 Dec 2024, 05:39 PM
দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। গত চারদিন ধরে দশ এর ঘরে রেকর্ড হচ্ছে তাপমাত্রা।
উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। রাত গভীর হলে বরফ পড়ার মতো ঠান্ডা অনুভূত হয় পঞ্চগড়বাসীর। তবে সকাল ৭টার পর থেকে রোদের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে শীতের প্রকোপ কমে আসে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, “শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-১০ এর মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়।”
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি রেকর্ডের মাধ্যমে শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দিনের তাপমাত্রা (সর্বোচ্চ) বেড়ে রেকর্ড করা হয় ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্রবার সকালে সরজমিনে দেখা যায়, ঝলমলে রোদে বের হয়েছেন লোকজন; যে যার কাজে ছুটছেন। তবে ভ্যান চালাক, শাকসবজি তোলা, পাথর তোলা ও চা বাগানে কাজ করতে আসা লোকজন জানান তাদের কষ্টের কথা।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা ভাসাইগর এলাকার বাসিন্দা রফিক বলেন, “রাতে ঠান্ডা লাগছে। এদিকে দিনে গরম।”
ওই এলাকার সফিক ও মিন্টু আলম বলেন, গভীর হলে বরফ পড়ার মতো ঠান্ডা অনুভূত হয় পঞ্চগড়বাসীর। সকাল ৭টার পর থেকে রোদ উঠলে তখন শীতের তীব্রতা কমতে থাকে।
তবে প্রতিদিন বিকালের পর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত শৈত্যপ্রবাহের কারণে কাজে বের হওয়া দিনমজুর, কৃষি শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
বোদা উপজেলার নয়াদীঘী এলাকার কৃষক উসমান গণি বলেন, “সন্ধ্যার পর থেকে কনকনে শীত পড়তে থাকে। উপায় না পেয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে ঠান্ডা কমানোর চেষ্টা করি। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা যেন জিরো ডিগ্রিতে নেমে আসে।
“এ সময়টায় শরীরে ডাবল কম্বল বা লেপ নিলেও মনে হয় ঠান্ডা লাগে। বিছানা, ঘরের ফ্লোর, আসবাবপত্র সবকিছুই বরফ হয়ে উঠে। আবার সকাল ৭-৮ টার পর থেকে শীতের প্রকোপ আর তেমন থাকে না ।”
এদিকে শীতের কারণে জেলায় জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি বেড়েছে। প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতে সুরক্ষা থাকতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া কর্মকর্তা জিতেন্দ্র বলেন, “পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা টানা চারদিন ধরেই ১০ এর নিচে অবস্থান করছে। জানুয়ারির শুরুতে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে।”