ওই পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে সঞ্চয়পত্রের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত কুপন জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে কর্তৃপক্ষ।
Published : 10 Jul 2024, 10:20 PM
সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
কেন্দ্রীয় সার্কেলের পোস্ট মাস্টার জেনারেল মো. ফরিদ আহমেদের স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে জানান নেত্রকোণা জেলা পোস্ট অফিসের পরিদর্শক আবু হেনা মোনাসিফ করিম।
বুধবার তিনি জানান, রোববার কেন্দ্রীয় আদেশের পরদিন পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার জায়গায় মধুভূশন সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের নভেম্বরে শাহেদুন্নাহার কেন্দুয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে যোগদান করেন। এর আগে তিনি নেত্রকোণা সদরে পোস্ট মাস্টার পদে কর্মরত ছিলেন।
বরখাস্তের আদেশ বলা হয়েছে, পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহার সঞ্চয়পত্রের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত কুপন জালিয়াতি এবং বাতিল মুনাফা কুপনে ফ্লুইড ব্যবহার করে পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদি ও সরকারি নথি ছিঁড়ে ফেলেন।
এমনকি এ ঘটনায় করা তদন্ত দলের কাছে তিনি লিখিত বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান; যা সুষ্ঠু তদন্তে অসহযোগিতা ও ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে বলে আদেশ বলা হয়েছে।
অসদাচরণ ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ), ধারা ৩৯ (১) ও বিধি ১২ (১) অনুযায়ী শাহেদুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
শাহেদুন্নাহার কেন্দুয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে যোগদানের আগে সদর অফিস থেকে এক নারীর পুরোনো সঞ্চয়পত্রের কুপন সঙ্গে নিয়ে যান। যে সঞ্চয়পত্রের টাকা ২০১৭ সালে ওই নারী তুলে নেন।
পরে শাহেদুন্নাহার ওই ভাঙানো সঞ্চয়পত্রে থাকা লাল কালির কাটা চিহ্ন ফ্লুইড দিয়ে মুছে পাঁচ লাখ টাকা তুলে নেন। সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য-প্রমাণ ছিঁড়ে ফেলেন তিনি।
বিষয়টি ডাক বিভাগের নজরে এলে ময়মনসিংহ ডাক বিভাগের সুপারিন্টেন্ডেন্ট রিপন রায়কে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। এ কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- ময়মনসিংহ ডাক বিভাগের পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র ধর ও নেত্রকোণা পোস্ট অফিসের পরিদর্শক আবু হেনা মোনাসেফ করিম।
প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। পরে কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী পোস্ট মাস্টার শাহেদুন্নাহারকে সাময়িক বরখাস্ত করে কেন্দ্রীয় সার্কেল।