বন্যা কবলিত এলাকার উঁচু স্থানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
Published : 19 Jun 2024, 01:37 AM
উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে মৌলভীবাজারের নদ-নদীর পানি বাড়ায় চার উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে বন্যা কবলিত এলাকার উঁচু স্থানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার সবকটি নদীতে উজানে বৃষ্টি হওয়ায় নদীগুলো পানিতে টুইটুম্বর। বাড়ছে মনু, ধলাই, কুশিয়ারা, জুড়ি, কন্টিনালা ও ফানাই নদীর পানি। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ধলই বিপৎসীমার সমান্তরালে অতিবাহিত হলেও বাকী সব কটি নদী বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম বলেন, “ক্রমাগত বর্ষণ ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে।
তার মধ্যে বড়লেখা উপজেলার চারটি, জুড়ি উপজেলার তিনটি, কুলাউড়া উপজেলার তিনটি, সদর উপজেলার চারটি এবং রাজনগর উপজেলার দুইটি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে।
“ক্রমবর্ধমান পানি বৃদ্ধির ফলে উল্লিখিত উপজেলাসমূহে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এরইমধ্যে জুড়ি, বড়লেখা এবং কুলাউড়া উপজেলায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ভুক্তভোগী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।”
এদিকে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদী ভাঙনের শঙ্কা। আতঙ্কে রয়েছেন নদী পাড়ের মানুষ। মনু, ধলাই, কশিয়ারা, জুড়ি, কন্টিনালা, ফানাইসহ নদীর অর্ধশতাধিক পয়েন্ট ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
মৌলভীবাজার সব ইউএনওদের সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা এবং আশ্রয়কেন্দ্র সমূহে প্রয়োজনীয় ঔষধসহ খাবার ও পানির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
এদিকে মঙ্গলবার ভোর রাতে থেকে বিকাল পর্যন্ত টানা আট/দশ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার শহরতলীর কিছু অংশ, শ্রীমঙ্গল উপজেলার সবুজবাগ, লাল বাগ, রুপসপুর, সুরভীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।
রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে ও অনেকের বাড়িতে পানি উঠায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
সবুজ বাগ এলাকার বাপ্পী দাশ, রিংকু দেবরায় ও শেখর চক্রবর্তী বলেন, পাহাড়ি ছড়াগুলোর দুই পাড় দখল হয়েছে। অন্যদিকে কমেছে ছড়ার নাব্যতা। এতে একটু বৃষ্টি হলেই এবং পাহাড়ি ঢল নামলেই মানুষের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে।
শ্রীমঙ্গল হবিগঞ্জ সড়কের শিলু ভট্টাচার্য জানান, ছড়ার পাড় ডুবে স্রোত তাদের ঘরের ভিতর দিয়েও প্রবাহিত হয়েছে। এতে তাদের থাকার একমাত্র ঘরটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। নিজেদের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় এমনিতেই তাদের ঘরটি দুর্বল। এখন আরও দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।