১০ ডিসেম্বর কর্মীদের পাহারায় থাকার নির্দেশ ওবায়দুল কাদেরের

“‘খেলা হবে’ স্লোগান সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করছে।“

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2022, 03:24 PM
Updated : 5 Dec 2022, 03:24 PM

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের দিন সারাদেশেই দলীয় নেতাকর্মীদের ‘সতর্ক পাহারায়’ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

নোয়াখালীতে এক জনসভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি রাতের অন্ধকারে বিআরটিসির গাড়ি পুড়িয়েছে। ঢাকা-সিলেট সড়কে রাতের অন্ধকারে শেখ হাসিনার ভিত্তিপ্রস্তর পুড়িয়েছে। ১০ ডিসেম্বর রাজপথ নাকি দখল করবে, ঢাকা দখল করবে ফখরুল সাহেবরা। 

“আমি বলতে চাই, আমাদের নেতাকর্মীরা মহানগর, পাড়া-মহল্লা, জেলা-উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, গ্রাম সব জায়গায় সতর্ক পাহারায় থাকবে। তারা (বিএনপি) আগুন নিয়ে আসবে, লাঠি নিয়ে আসবে এজন্যই পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করতে চায়। বিশাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ফখরুল সাহেবরা বলেন খাঁচা।” 

সোমবার দুপুরে নোয়াখালী শহরের শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা করেন। 

এ সময় আলোচিত ‘খেলা হবে’ স্লোগান নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “‘খেলা হবে’ স্লোগান মির্জা ফখরুলের পছন্দ নয়, আরও কারো কারো পছন্দ নয়। কিন্তু যে স্লোগান জনগণের পছন্দ সেই স্লোগান আমি দিয়ে যাব। ‘খেলা হবে’ স্লোগান জনগণ গ্রহণ করেছে, তাই আমি সবসময় এই শ্লোগান দিয়ে যাব। ‘খেলা হবে’ স্লোগান সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করছে।“ 

এ সময় ওবায়দুল কাদের ‘ডিসেম্বরে খেলা হবে’; ‘আগামী নির্বাচনে খেলা হবে’; ‘আন্দোলনে খেলা হবে’; ‘অর্থপাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে’; ‘ভোট চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে’; ‘হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে’; ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে’; ‘দু:শাসনে বিরুদ্ধে খেলা হবে’- ইত্যাদি স্লোগান দিলে নেতাকর্মীরাও মাঠ থেকে আওয়াজ তুলেন।  

নোয়াখালীর রাজনীতিতে দলীয় বিভক্তি মুছে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই, আমাদের অস্তিত্বের জন্য। আমি কারো অন্ধ সমর্থক নই। যারা কাজ করে আমি তাদের পক্ষে বলি। 

“আমি নোয়াখালীর স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে, আমার ভাই আব্দুল কাদের মির্জা ও একরামুল করিম চৌধুরীকে ক্ষমা করে দিয়েছি। নোয়াখালীতে আমি কোনো কলহ রাখতে চাই না। আমি কলহমুক্ত আওয়ামী লীগ চাই।”  

শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “একজন স্কুল শিক্ষকের ছেলে হয়ে আমি ১৬ বছর ধরে মন্ত্রিত্ব করেছি। চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগের মতো পার্টির সাধারণ সম্পাদক আর কেউ নেই। আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার কাছে ঋণী। আমি বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানার কাছে ঋণী। জেলে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছি। শেখ হাসিনার হাত ধরে উঠতে উঠতে আজ এত উপরে উঠেছি।” 

নিজের শহর নোয়াখালীতে ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, “নোয়াখালী আমার মায়ার শহর। আমার কলেজ জীবন কেটেছে এই শহরে। বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাদের ঘরের হোস্টেলের ১ নম্বর রুমে আড়াই বছর কেটেছে। তখন আইয়ুব খানের এনএসএফের সদস্যদের হাতে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। আমার গায়েও লাঠির আঘাত লেগেছে।“  

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহ্বায়ক পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, এইচ এম ইব্রাহিম, মোরশেদ আলম, মামুনুর রশীদ কিরণ, আয়েশা ফেরদাউস, নোয়াখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন। 

সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের নাম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও বলেন, একাধিক প্রার্থী থাকায় ১৭ ডিসেম্বর কাউন্সিলরদের ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন।