Published : 06 May 2025, 03:45 PM
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শামসুল ইসলাম চৌধুরী হত্যা মামলায় তার ছেলেসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার সকালে সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শাহাদত হোসেন প্রামাণিক ১৪ বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আনছারুজ্জামান জানান।
দণ্ডিতরা হলেন- আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না (৪৫), তার সহযোগী জাহের আলী (৩৫) ও আনসার আহমদ (২৫) ।
মামলার বরাতে পিপি আনছারুজ্জামান বলেন, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে নামাজরত অবস্থায় সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীকে তার ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না পেছন থেকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে শামসুল ইসলাম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
পরে তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অচেতন অবস্থায় গাড়িতে তুলে সুনামগঞ্জের ছাতকের মল্লিকপুর এলাকার সুরমা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। কয়েকদিন পর সুনামগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামে সুরমা নদীতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মুন্নাকে গাড়িচালকসহ তিনজন সহযোগিতা করেন।
মামলার রায়ে গাড়িচালক বোরহান উদ্দিনকে তিন বছরের সাজা দেয় আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছেন। মামলার ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষ্য দেন বলে জানান আনছারুজ্জামান জানান।
তিনি বলেন, অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর চার মেয়ে ও দুই ছেলের জনক ছিলেন। তার বড় ছেলে মাহমুদ আহমদ চৌধুরী এই মামলার বাদী। বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট গোলাম এহিয়া চৌধুরী সোহেল।
সিলেটে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “বিভাগীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. শাহাদত হোসেন তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, পৃথিবীতে বাবা-ছেলের মধুর সম্পর্ক থাকে। বৃদ্ধ বয়সে এসে বাবা ছেলের সহায়তা চেয়ে থাকেন। সে অবস্থায় আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীকে জমি সংক্রান্ত জের ধরে হত্যা করা হয়। এই রায়ের মাধ্যমে নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সাজা পাবেন।”
সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের পেশকার মো. আহমদ আলী বলেন, “মুন্না তার বাবাকে বলেছিলেন, মীরবক্সটুলার বাসার সামনের অংশ তার নামে লিখে দিতে। কিন্তু শাহাদত হোসেন তাতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে মুন্না প্রায়ই তাকে মানসিক নির্যাতন করতেন।”