“সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনের জের, নিছক দুর্ঘটনা, নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে এসব বিষয় মাথায় রেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।”
Published : 22 May 2024, 06:36 PM
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় একটি পারিবারিক কালী মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে মন্দিরের প্রতিমাসহ বেশ খানিকটা পুড়ে গেছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের দোহাজারি গ্রামের পশ্চিম পাড়ার শ্যাম অধিকারীর পারিবারিক মন্দিরে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে বলে জানান বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজিয়া সিদ্দিকা সেতুসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আগুন কীভাবে লেগেছে তা উদঘাটনে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শ্যাম অধিকারীর পরিবারের সদস্য অঞ্জনা অধিকারী। তিনি নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন দাসের আনারস প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (সদ্য স্থগিত হওয়া কমিটি) সেখ ওয়াহিদুজ্জামান বাবু।
রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সেখ ওয়াহিদুজ্জামান বাবু মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪৬ হাজার ৬৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ পেয়েছেন ২৯ হাজার ৭৭৭ ভোট।
আওয়ামী লীগ নেত্রী অঞ্জনা অধিকারী বলেন, “নির্বাচনে প্রতিপক্ষ বিজয়ী হওয়ার পর বাড়িতে এসে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায়। খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার পর গভীর রাতে বসত ঘরের পাশের কালী মন্দিরে আগুন দেখতে পাই। ঘুম থেকে উঠে ডাক-চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এসে পানি ছিটিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।”
নির্বাচনে পক্ষ নেওয়ায় প্রতিপক্ষ পারিবারিক মন্দিরে আগুন দিয়েছে অভিযোগ করে অঞ্জনা অধিকারী জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
গ্রামের বাসিন্দা কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, দোহাজারী গ্রামের মানুষ শান্তিপ্রিয়, সবাই মিলেমিশে বসবাস করছে। গ্রামের শান্তি নষ্ট করতে তৃতীয় কোনো পক্ষ এ কাজ করতে পারে বলে তাদের ধারণা।
আগেও এই বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। বারবার কেন এমন ঘটছে তার সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন গ্রামবাসী।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনের জের, নিছক দুর্ঘটনা, নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে এসব বিষয় মাথায় রেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের পর পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
ফকিরহাটের ইউএনও সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু বলেন, “পারিবারিক কালী মন্দিরের পাশে একটি জ্বালানি কাঠের ঘর ছিল। ওই ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই আগুন থেকে পাশের কালী মন্দিরের একটি অংশ পুড়ে গেছে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা জানিয়ে ইউএনও বলেন, “কিভাবে আগুন লেগেছে প্রশাসন তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সেখ ওয়াহিদুজ্জামান বাবু পারিবারিক মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।