“তারা যদি আমাদের সঙ্গে পায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশি কেউ আর ভারতমুখী হবে না।”
Published : 03 Dec 2024, 04:05 PM
ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলার ঘটনাকে ভারতের ‘পায়ে পড়ে ঝগড়া’ হিসেবে দেখছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।
ভারত এ ধরনের আচরণ অব্যাহত রাখলে বাংলাদেশিরা আর ভারতমুখী হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর আধুনিক নদী বন্দর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে লঞ্চঘাটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তসহ বিআইডাব্লিউটিএর স্থানীয় কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার দুপুরের দিকে ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের প্রাঙ্গণে জোর করে ঢুকে ‘হামলা’ চালায় একদল বিক্ষোভকারী।
পরে তারা সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলে বলে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়। পরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভ ও উত্তেজনাকার পরিস্থিতির এ ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলেছে ভারত সরকার। অন্যদিকে এ ঘটনাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ মন্তব্য করে ‘ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সব কূটনৈতিক মিশন ও সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
এ হামলার প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। কিন্তু তারা যদি আমাদের সঙ্গে পায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশি কেউ আর ভারতমুখী হবে না।”
তিনি বলেন, “এ ঘটনায় ভারতের হাইকমিশনারকে যদি তলব না করা হয়ে থাকে, হবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো খারাপ সম্পর্ক ছিল না। আমাদের দেশে অন্য ধর্মালম্বী যারা আছেন, তারা আমাদের দেশের নাগরিক। তাদের নিরাপত্তার বিষয় আমরা দেখব এবং সরকারের কাজই হলো এটি।”
চাঁদপুর আধুনিক নদী বন্দর নির্মাণ কাজে অনিয়ম প্রসঙ্গে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “যারা অনিয়ম কিংবা চুরি করেছে, তাদের আর জাল দিয়ে ধরে আনা যাবে না। এখন যাতে করে কোনো ধরনের চুরি না হয় সেটাই আমাদের দেখা দরকার। নানা কারণে কাজটি করতে দেরি হচ্ছে, যে কারণে নিজেই দেখার জন্য এসেছি।
“যে প্রতিষ্ঠান কাজটি নিয়েছে, তাদের আগেই চিন্তা করা দরকার ছিলো কাজটিতে চ্যালেঞ্জ আছে। যদি তাদের কারণে বিশ্ব ব্যাংকের এই বরাদ্দ ফেরত যায়, তাহলে এই ঠিকাদারকে ধরবো।”
মেঘনায় ড্রেজারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “আমি ঢাকা থেকে আসার সময় চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জের মাঝামাঝি ষাটনল এলাকায় দেখেছি, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। আমাকে দেখে তারা পালিয়েছে। কিন্তু আমি ছবি তুলে রেখেছি।
“এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসককে ডেকেছি। তার সঙ্গে কথা বলাব। আমি সেখানে যাব। যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”