সকালে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে বিএনপির এক নেতার নেতৃত্বে একদল লোক মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ আয়োজকদের।
Published : 01 Feb 2025, 10:57 PM
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মাসব্যাপী গ্রামীণ মেলায় যাত্রা ও সার্কাসের আয়োজন নিয়ে বিএনপির এক পক্ষের আপত্তির মুখে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন আহত হয়েছেন।
শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ি ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম।
আহতরা হলেন- উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে রবিন মিয়া (২০) এবং ভুতবাড়ি গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে তাওহীদ হোসেন (২১)। তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আয়োজকরা জানান, বিএনপি নেতা ও উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বাবুর নামে মাসব্যাপী গ্রামীণ আনন্দমেলার অনুমতি নেওয়া হয়। ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বগুড়া জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে এই মেলার অনুমতি নিয়েছে বলে দাবি আয়োজক কমিটির।
রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা শুরু হওয়ার কথা।
বিএনপির এক পক্ষের অভিযোগ, ধুনট উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বাবু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাছুদুল হক বাচ্চুর ব্যবস্থাপনায় মেলাটি আয়োজন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা ১১টায় ধুনট উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ভুতবাড়ি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একদল লোক মেলা প্রাঙ্গণে যান। মেলায় যাত্রা ও সার্কাসে কোনো প্রকার অশ্লীল নাচগান পরিবেশন করা যাবে না বলে আয়োজক কমিটিকে সতর্ক করেন তারা।
এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে রবিন ও তাওহীদ আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “মেলায় যাত্রা ও সার্কাসে অশ্লীল নাচগান না চালানোর জন্য আয়োজক কমিটির কাছে বলতে গিয়েছিলাম। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন এবং মাছুদুল হক বাচ্চুর লোকজন আমাদের ওপর হামলা করেছে।
“মাছুদুল হক বাচ্চু ৩০ বছর ধরে এখানে মেলার নামে লটারি, জুয়া ও অশ্লীল নৃত্যের আয়োজন করে আসছেন। আমরা এই মেলা বন্ধের দাবি করছি।”
মেলা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, “জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মাসব্যাপী এই মেলার অনুমতি নেওয়া হয়েছে। রোববার থেকে মেলা শুরুর প্রস্তুতি চলছে।
“এর আগে যাত্রা ও সার্কাসে অশ্লীলতার অজুহাত তুলে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে মেলা ভাঙচুরের চেষ্টা করা হয়েছে।”
তবে আওয়ামী লীগ নেতা মাছুদুল হক মেলার অনুমতিতে সহযোগিতা করেছেন বলে জানান এই বিএনপি নেতা।
ওসি সাইদুল আলম বলেন, আপাতত ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে তিনি অবগত আছেন।