ব্রহ্মপুত্র খনন: অনিয়মের অভিযোগে ‘নাগরিক আহাজারী’

আন্দোলনকারীরা জানান, আগামী ১৭ জুন রেলওয়ে স্টেশনের কৃষ্ণচূড়া চত্বরে ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে দুই জোড়া ট্রেন চালুর দাবিতে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2023, 11:38 AM
Updated : 9 June 2023, 11:38 AM

ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদ খনন নিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কাচারীঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদীর হাটু জলে দাঁড়িয়ে ‘নাগরিক আহাজারী’ নামে প্রতিবাদ কর্মসূচি করে জেলা নাগরিক আন্দোলন।

এতে তিতাসের আবাসিক গ্যাস সংযোগ বঞ্চিতরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। কর্মসূচির মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদ খননের নামে যে প্রহসন চলছে তার প্রতিবাদ জানানো হয়।

জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কালাম বলেন, “দখল, দূষণ আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্য ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে শুরু হয় খনন কাজ। প্রায় দুই হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নদের ২২৭ কিলোমিটার খনন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ)। খননের পর যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফিট প্রশস্ত ও শুস্ক মৌসুমে ১০ ফুট গভীর থাকবে এমনটি কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কাঙিক্ষত খনন হয়নি। যে নদ দিয়ে এই সময়ে লঞ্চ-স্টিমার চলার কথা, সে নদ মানুষ হেঁটে পার হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনও এমনটি চায়নি। নাগরিক সমাজ মনে করে, এখানে নদ খননের নামে অর্থ লোপাট হয়েছে। তাই নদের নাব্যতা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”

সংগঠনটির সভাপতি এএইচএম খালেকুজ্জামান বলেন, “বিভাগ গঠনের কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় আমরা হতাশ। ব্রহ্মপুত্র নদ খননসহ আমাদের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি দাবি রয়েছে; তা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

আগামী ১৭ জুন রেলওয়ে স্টেশনের কৃষ্ণচূড়া চত্বরে ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে দুই জোড়া ট্রেন চালুর দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হবে।

এদিকে, ব্রহ্মপুত্র নদ খননের প্রধান প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রকৌশলী খন্দকার রাকিবুল ইসলাম বলেন, “জুলাই মাসে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা পর্যন্ত জাহাজ চলবে। উদ্বোধনের জন্য মন্ত্রীর সিডিউল চাওয়া হয়েছে। প্রকল্পের টাকা ছাড় না হওয়ায় খনন কাজ চলছে ধীর গতিতে।”

সম্প্রতি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ময়মনসিংহে এসে ব্রহ্মপুত্র নদ খনন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “করোনার কারণে দুই বছর ব্রহ্মপুত্র নদ খনন কাজ বন্ধ থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে সম্ভব হয়নি। তবে আশা রাখছি, দ্রুত নদের খনন কাজ সম্পন্নের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে।”   

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গ্রাহক গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ ঠিকাদার ঐক্য ফেডারেশনের জেলা সভাপতি রমজান আলী খন্দকার বলেন, “সাত থেকে আট বছর আগে হঠাৎ করে তিতাস গ্যাসের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত চালুর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পায়নি। প্রায় ২ লাখ ২০ হাজারের মতো গ্রাহক টাকা জমা দিয়ে রেখেছে। তাদের চাপে আমরা অনেকটাই কোণঠাসা। আশা করি, সরকার দ্রুত বিষয়টি সুরাহা করবে।”