এ বছর পানি কম থাকায় ১২৭ দিন পর্যন্ত হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে প্রশাসন। যা রোববার শেষ হয়।
Published : 01 Sep 2024, 11:49 PM
মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষে রোববার থেকে আবারো ফিরে এসেছে কাপ্তাই হ্রদের সেই চিরচেনা রূপ। তবে প্রথম দিনে প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ আহরণ করতে পারেননি জেলেরা।
কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি এবং অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর ৯০ দিন কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকে।
এ বছর হ্রদে পানি কম থাকায় ১২৭ দিন পর্যন্ত হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে জেলা প্রশাসন।
সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার প্রথম দিন ভোর হতেই জেলেদের আহরণকৃত মাছ বোটে করে নিয়ে আসা হয় জেলার সর্ববৃহৎ অবতরণ কেন্দ্র ফিসারি ঘাটে। ব্যবসায়ী ও শ্রমিকের হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠেছে পল্টুন।
তবে এবার কাপ্তাই হ্রদে পানি বেশি থাকা এবং আঞ্চলিক দলের চাঁদার কারণে হ্রদের একটি অংশে জেলেরা মাছ আহরণে না নামায় প্রথমর দিনে প্রত্যাশিত মাছ আহরণ হয়নি।
বাদল দাস নামে এক জেলে বলেন, হ্রদে প্রচুর পানি ও স্রোত থাকায় জাল টানা যাচ্ছে না। পানি স্থির না হওয়া পর্যন্ত জালে মাছ আসবে কম। তবুও দীর্ঘ দিন পর জাল নিয়ে হ্রদে নামতে পারায় তারা খুশি।
তিনি আরও বলেন, মাছ ধরা বন্ধকালীন বেকার সময় কেটেছে। পরিবার নিয়ে কষ্টে ছিলেন। আশা করছেন, জালে মাছ আসবে; কষ্ট দূর হবে।
বাঁধন দাস নামে আরেক জেলে জানান, অন্য বছর নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথম দিনে প্রতি খেপে ৫-৬ ড্রাম মাছ পেতেন। এ বছর ১০-১২ কেজির বেশি মাছ পাননি।
কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর শুক্কুর বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় হ্রদে এবছর পানি বেশিসহ কিছু সমস্যা থাকায় জেলেরা মাছ শিকার করতে পারছেন না। যদিও এখনো অনেকে মাছ আহরণে নামেননি। তাই প্রথম দিন প্রত্যাশিত মাছ আহরণও হয়নি।
এদিকে, চাঁদার অভিযোগে কাপ্তাই উপজেলার জেলেরা হ্রদ থেকে প্রথমদিন মাছ আহরণ করেননি।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হ্রদে মাছ শিকার ও পরিবহনের জন্য স্থানীয় কিছু গোষ্ঠীকে চাঁদা দিতে হয়। এ বছর তারা চাঁদার হার দ্বিগুণ করেছে। যা অনেক ব্যবসায়ী ও জেলের পক্ষে এখনো দেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “জেলেদের মধ্যে নানাবিধ আশঙ্কা কাজ করছে বলে আমি শুনেছি। যার কারণে অন্যান্য বছরের তুলনা এবছর প্রথম দিনে সকাল থেকে ঘাটে মাছ অবতরণ কম হচ্ছে। এ বছর পানির পরিমাণ যেহেতু অনেক বেশি। আমরা আশা করছি, আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে, সেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হবে।”
মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন বলছে, প্রথম দিনে ৬৫ টন মাছ আহরণ করা গেছে। যা থেকে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ১৩ লাখ টাকা। রাঙামাটির চারটি অবতরণ ঘাটের মাধ্যমে এর রাজস্ব আদায় হয়।