পর্যাপ্ত আমদানি এবং পরিশোধন সমস্যায় জ্বালানি তেল পেট্রোল, ডিজেল ও অকটনের প্রকট সংকট দেখা দিয়েছে পঞ্চগড়ের ফিলিং স্টেশনগুলোয়, এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
Published : 09 May 2022, 01:40 PM
বৃহস্পতিবার থেকে একটু একটু করে শুরু হওয়া এই 'জ্বালানি তেল সংকট' চরমে পৌঁছেছে রোববার বলে জানান ফিলিং স্টেশনগুর কর্তাব্যক্তিরা।
সদর উপজেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, তেল নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে বাইক চালকরা পড়েছেন দুর্গতিতে, কারণ সবেচেয়ে বেশি সংকট হয়েছে পেট্রোলের।
সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকার মৈত্রী ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার সাদেকুল ইসলাম বলেন, "সবচেয়ে বেশি পেট্রোল সংকট হয়েছে, শত শত গ্রাহক মোটরসাইকেল আরোহী এসে পেট্রোল পাচ্ছেন না, তারা ফিরে যাচ্ছেন।"
জ্বালানি তেলের মধ্যে ডিজেল ও অকটেন পার্বতীপুর ও বাঘাবাড়ি থেকে এবং পেট্রোল শুধুমাত্র বাঘাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হয় জানিয়ে পঞ্চগড় ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. হিরণ বলেন, "ডিপোগুলোতে পর্যাপ্ত আমদানি না থাকা এবং রিফাইনিং সমস্যার কারণে সম্প্রতি সংকট তৈরি হয়েছে।"
শহরের কাঞ্চনজংঘা ফিলিং স্টেশনে আনা গড়িনাবাড়ি এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, "পাম্প কর্তৃপক্ষ যদি আগেই জানিয়ে দিত যে, তেল পাওয়া যাবে না, তাহলে আগেই ট্যাংকি ভর্তি করে পেট্রোল সংগ্রহ করতাম। কিন্তু এখন না পাওয়ায় বিপাকে পড়ে গেছি।"
জেলার হাড়িভাষা এলাকা থেকে করতোয়া ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলে পেট্রোল নিতে আনা শফিকুল ইসলাম তেল না পেয়ে জানালেন, পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে তাকে হয়তো মোটরসাইকেল ঠেলে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।
"শ্বশুরবাড়িতে যাব কিন্তু আমার মোটরসাইকেলে পেট্রোল নেই, পাম্পেও পেট্রোল নেই।”
পঞ্চগড় ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. হিরণ বলেন, প্রতিদিন তার ফিলিং স্টেশন থেকে প্রায় দেড় হাজার লিটার পেট্রোল, ৩০ হাজার লিটার ডিজেল এবং ৫০০ লিটার অকটেন বিক্রি হয়।
"বর্তমানে সংকটের কারণে ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।"
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, পঞ্চগড়ে তালিকাভুক্ত ফিলিংস স্টেশনের মোট সংখ্যা ২৯টি। জেলায় পেট্রোল ১৫ হাজার ৫৩৩ লিটার, ডিজেল ৩৫ হাজার ৫৮০ লিটার এবং অকটেন তিন হাজার ৫৬৬ লিটার প্রতিদিনের চাহিদা বলে জানান জেলা প্রশাসক।
তেল সংকটের বিষয়ে 'খোঁজ নেওয়া হচ্ছে' জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, "কী কারণে পঞ্চগড় জেলায় তেল সরবরাহ কমে গেছে জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, খুব দ্রুত সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।"
মঙ্গলবারের মধ্যেই জেলায় জ্বালানি তেল সংকট কমে যাবে বলে আশা করছেন জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম।