রোহিঙ্গা ‘ডাকাত সর্দার’ কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত

পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন এক রোহিঙ্গা ‘ডাকাত’; যিনি কক্সবাজারের যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যামামলার প্রধান আসামি।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2019, 05:50 AM
Updated : 1 Sept 2019, 05:50 AM

রোববার ভোররাতে কক্সবাজারের টেকনাফে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

নিহত নুর মোহাম্মদ (৪৫) হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত কালা মিয়ার ছেলে।

তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরকেন্দ্রিক সংঘবদ্ধ ডাকাত দল গড়ে তুলে নানা অপরাধ সংঘটিত করছিলেন বলে পুলিশের দাবি।

গত ২৩ অগাস্ট রাতে হ্নীলা ইউনিয়ন যুবলীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি ফারুককে জাদিমুরা এলাকার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশের দাবি, ওই হত্যাকাণ্ড সংঘবদ্ধ রোহিঙ্গা অপরাধী চক্র ঘটিয়েছিল।

ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজন রোহিঙ্গা ইতোপূর্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন। নুর মোহাম্মদকে নিয়ে চারজন নিহত হলেন ‘বন্দুকযুদ্ধে’।

নুর মোহাম্মদকে শনিবার সন্ধ্যায় হ্নীলা ইউনিয়নের উলুচামারী এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে ওসি প্রদীপ জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে গহীন পাহাড়ে অস্ত্র মজুদ থাকার তথ্য স্বীকার করেন তিনি।

“ভোররাতে জাদিমুরা ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে পুলিশের একটি দল নুর মোহাম্মদকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্র তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।”

‘গোলাগুলি’ থেমে গেলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নুর মোহাম্মদকে পাওয়া যায় বলে জানান ওসি। তিনি বলেন, ‘গোলাগুলিতে’ তিন পুলিশ সদস্য পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম শামশুদ্দোহা, কনস্টেবল আর্শেদুল ও অন্তর চৌধুরী আহত হন।

“গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিসহ আহত পুলিশ সদস্যদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে আনা হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

নুর মোহাম্মদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে ৫টি দেশে তৈরি বন্দুক, ১৮টি গুলি ও ২০টি গুলির খালি খোসা পাওয়ার কথাও জানান ওসি।

পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ বলেন, “নুর মোহাম্মদ রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সর্দার। সে গত ১৯৯২ সালে মিয়ানমার থেকে এসে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছে।

“তার নেতৃত্বে ডাকাত দলের সদস্যরা গহীন পাহাড়ে আস্তানা গড়ে তোলে ডাকাতিসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করত। হত্যা ও ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।”

যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যামামলায়ও নুর মোহাম্মদকে খোঁজা হচ্ছিল বলে জানান ওসি।