“রোদে কাজ করা যাচ্ছে না।এজন্য খুব ভোর থেকে কাজ শুরু করেছি।”
Published : 26 Apr 2024, 08:18 PM
‘গরমে কোথাও টিকতে পারছি না।হাঁসফাঁস লাগছে। বলছিলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সীগঞ্জ গ্রামের মোহাম্মদ জিন্নাহ।
প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন জিন্নাহ। কিন্তু এখানেও দুদণ্ড শান্তি নেই। কারণ তার মত আরও অনেকে গরমে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছেন।বেডের তুলনায় রোগীও বেশি। ফলে সেখানেও মিলছে না শান্তি।
জিন্নাহ বলেন, “হাসপাতালেও রোগীর খুব ভিড়। হাসপাতালের বারান্দায়ও রোগী।”
শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে; যা সারাদেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। শুক্রবার বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস এই তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এর আগে এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে; ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র তাপমাত্রা থাকায় মানুষ ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না।জরুরি কাজে কেউ বাইরে গেলেও রোদ-গরমের দাপটে হাঁপিয়ে উঠছেন।ক্লান্ত শ্রমজীবীরা মাঠে টিকতে না পেরে বিশ্রাম নিচ্ছেন ছায়ায়।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, “গত তিনচার দিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। শুক্রবার তাপমাত্রা এই মৌসুমের পেছনের দিনগুলোর রেকর্ড ভেঙে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। এই অবস্থা আরও দুই-তিনদিন থাকতে পারে।”
তিনি বলেন, “চলতি এপ্রিল মাসের ১২ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলছে চুয়াডাঙ্গায়। এই সময়ে মৃদু, মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ থেকেছে। টানা ১৪ দিন তাপপ্রবাহ থাকায় সঙ্গত কারণেই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন।
“এই সময়ে সবার সতর্ক হয়ে চলা উচিত।চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।রোদে না গেলেই ভাল।সাবধানে থাকতে হবে।”
খুব সকালে সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের মাঠে কথা হয় সদর উপজেলার গাইদঘাট গ্রামের কাশেম আলীর সঙ্গে।সেখানে ধান কাটতে গিয়েছিলেন তিনি।
কাশেম আলী বলছিলেন, “রোদে কাজ করা যাচ্ছে না।এজন্য খুব ভোর থেকে কাজ শুরু করেছি।সকাল ৯টা সাড়ে ৯টার মধ্যে কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যাবে।এরপর আর মাঠে থাকা সম্ভব নয়।”
এদিকে প্রচণ্ড গরমের কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে।এ সময় শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান খোকন বলেন, “হাসপাতালে শিশু রোগী বেড়েছে।ধারণক্ষমতার দ্বিগুন রোগী।এই সময়ে শিশুদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
“ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। তার পরের শিশুদের মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দেওয়া যাবে। রোদে নেওয়া যাবে না। বাইরের কোনো খাবার না খাইয়ে টাটকা খাবার খাওয়াতে হবে।“
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, আগামী তিনদিন পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। বর্তমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।