বাড়ি বাড়ি থেকে তোলা ধান দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বাবুরঘোন গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবান্ন উৎসব।
Published : 19 Jan 2019, 11:34 AM
মমতাজ বেগমের বাড়ির আঙিনায় গোল হয়ে বসে নারীরা শুক্রবার বিকালে এই পিঠা বানান। একই সঙ্গে সমস্বরে গাওয়া হয় পিঠা বানানোর গান।
মমতাজ বেগম জানান, নয় বছর ধরে নিয়মিত হয়ে আসছে এই উৎসব। বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের সময় থেকেই উৎসব প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই সময় বাড়ি বাড়ি থেকে ধান সংগ্রহ করা হয়।
উৎসবে অংশ নেওয়া তরুণী সাহিদা খাতুন বলেন, “দিনটি ঘিরে রীতিমত উৎসবের আমেজ বয়ে যায় গোটা গ্রামে। এই দিন সবাই অনেক মজা করেন।
“বিশেষ করে প্রত্যেকটা কাজের সঙ্গে যে আলাদা আলাদ গীত গাওয়া হয়, সেটা খুবই উপভোগ্য। গ্রামের শিশু ও তরুণীরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন।”
গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারই ধান দেয় জানিয়ে মমতাজ বলেন, সেই ধান থেকেই চাল কুটে বানানো হয় পিঠা-পুলি। তেলপিঠা, তিলপিঠা, ভাপাপিঠা, পুলিপিঠা, দুধপিঠাসহ বাহারী নামের পিঠা বানানো হয়।
উৎসব তত্ত্বাবধান করেন স্কুলশিক্ষিক মমতাজ বেগম। তাকে সহযোগিতা করেন তার বোন শামীমা বেগমসহ অনেকে।
মমতাজ বলেন, “গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ গীত ও পিঠা-পুলির উৎসব যখন হারাতে বসেছিল তখনই আমরা এসব রক্ষার সংগ্রাম শুরু করি।
“এখন গ্রামের মেয়েরা শতাধিক গ্রামীণ গীত গাইতে পারে। অনেক ধরনের পিঠা-পুলি বানাতে পারে। কিন্তু একদিন তাদের কাছে এসব রূপকথার গল্পের মতো ছিল।”
দেশের গ্রামে গ্রামে এই সংস্কৃতি চর্চার প্রবণতা শুরু হোক এমনটাই আশা করেন তিনি।
বিকালে গ্রামের একটি মাঠে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে গান, নাচ, আবৃত্তিসহ ছিল নানান পরিবেশনা।