ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত একটি সঞ্চালন লাইন মেরামতের মধ্যেই জাতীয় গ্রিডের আরেকটি সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণ জনপদের অন্তত ৩২ জেলার মানুষকে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়েছে।
Published : 02 May 2017, 08:57 PM
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে রোগীদের এবং শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজকর্ম ব্যাহত হয়। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ কলকারখানায়ও কাজকর্ম ব্যাহত হয়েছে।
কালবৈশাখী ঝড়ে সোমবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কালীপুরে একটি বিদ্যুতের টাওয়ার ভেঙে পড়ে ২৩০ কিলোভোল্টের সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আশুগঞ্জের ওই লাইন মেরামত করার মধ্যেই মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ঘোড়াশাল-ঈশ্বরদী সঞ্চালন লাইন ‘ট্রিপ’ করলে দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশের জেলাগুলো বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ পাঠানোর জন্য দুটি ২৩০ কেভির লাইন আছে। একটি আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে, আরেকটি ঘোড়াশাল থেকে ঈশ্বরদীতে।
ঘোড়াশাল-ঈশ্বরদী সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিভ্রাট দেখা দেওয়ার পর পিজিসিবির রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল জোনে বিদ্যুৎ সরবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং তাতে করে সেসব এলাকার সব বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদনও থেমে যায়। এরপর এলাকাভেদে দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোগান্তির খবর জানাচ্ছেন জেলা প্রতিনিধিরা:
বরিশাল
বরিশালের অধিকাংশ এলাকা দিনভর বিদ্যুৎহীন ছিল। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন রোগী ও শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম জানান, এক হাজার শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে ১৩শ’ থেকে ১৪শ’। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
বার বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার কারণে লিফট চালু রাখা কিংবা রোগী উঠানো-নামানো নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীদের সিঁড়ি দিয়ে উঠানো নামানো হয়েছে।
অপরিহার্য অস্ত্রোপচার করতে জেনারেটর ব্যবহার করতে হয়।
বরিশাল সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ইমানুল হাকিম জানান, অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ইনকোর্স এবং উচ্চ মাধ্যমিক শাখার প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলছে। টানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় পরীক্ষার্থীদের।
দিনাজপুর
দিনাজপুরও প্রায় ছয় ঘণ্টার মতো বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানুষকে।
দিনাজপর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সারোয়ার জাহান জানান, জেনারেটরের সাহায্যে জরুরি অপারেশনগুলো করা হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ সমস্যা আরও কিছু সময় অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হতো।
বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পানির সমস্যায় পড়ে আবাসিক হোটেলগুলো এবং বহুতল ভবনের বাসিন্দারা।
শহরের কর্নকর্ড আবাসিক হোটেল মালিক স্বরূপ কুমার বকসী এবং চিলিস চাইনিস হোটেল মালিক রুবেল সিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকল্পভাবে আলো-বাতাসের (লাইট-ফ্যান) ব্যবস্থা করা হলেও পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।
একইভাবে বহুতল ভবনের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পানি সংকটের কবলে পড়ে রান্নাসহ অন্যান্য কাজে চরম দুর্ভোগে পড়েন তারা। অনেকে দুপুরের খাবার কিনে এনেছেন।
ঝালকাঠি
দিনভর বিদ্যুৎবিহীন থাকায় জেলার হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস ও দোকানপাঠসহ বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেলা ১১টা থেকে ৩/৪ ঘণ্টা সরবরাহ বন্ধ থাকে।
“জাতীয় গ্রিডে সমস্যা হওয়ায় আমারা সরবরাহ পাইনি। দুপুর তিনটা থেকে সরবারহ পেতে শুরু করি, কিন্তু তাও চাহিদার তিন ভাগের একভাগ।”
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স মনিন্দ্র নাথ হালদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুপুর থেকে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎবিহীন ছিল পুরো হাসপাতাল। বিকালেও যাওয়া আসার মধ্যে চলছে। এতে রোগীদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়।
ঝিনাইদহ
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছিল। অফিস-আদালত ও স্কুল-কলেজে কাজকর্ম ব্যাহত হয়।
খুলনা
বিদ্যুত না থাকায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং নগরীরর অর্ধশতাধিক বেসরকারি হাসপাতালে সার্জারি বিভাগে রোগীদের অপারেশন করা সম্ভব হয়নি।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনন্দ মোহন সাহা বলেন, হাসপাতালের জেনারেটর দিয়ে কিছু সময় জরুরি কয়েকটি ইউনিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তবে তা বেশি সময় চালানো সম্ভব হয়নি। ফলে চিকিৎসা সেবা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও খুলনা প্রাইভেট মেডিকেল প্রাক্টিশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. গাজী মিজানুর রহমান বলেন, তার হাসপাতালে জেনারেটর সাপোর্ট থাকায় অসুবিধা হয়নি। তবে অন্যান্য ছোটখাট ক্লিনিকে বেশ সমস্যা হয়েছে বিদ্যুতের অভাবে।
নওগাঁ
বিভ্রাটের আগে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় কালবৈশাখী ঝড়ে জেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যুত সরবরাহ শুরু হয়। অর্থাৎ ২১ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল জেলার অধিকাংশ এলাকা।
এ কারণে সীমাহীন ভোগান্তিতে স্থবির হয়ে পড়ে জেলার জনজীবন। জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য ও কল কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়। পাশাপাশি দুঃসহ গরমের যন্ত্রণা পোহাতে হয় জেলার সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি বিভিন্ন ক্লিনিকের রোগীদের।
মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়াশুনা করতে হয়েছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের। এছাড়া বাসা বাড়ি ও অফিস আদালতের স্বাভাবিক কাজ ও ব্যাহত হয়েছে।
নওগাঁ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান আকন্দ বলেন, রোগীদের কষ্ট পোহাতে হয়েছে।
নওগাঁ চালকল মালিক গ্রুপের সাবেক সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, গতরাত থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিদ্যুতের অভাবে ধান ক্রাশিং করা সম্ভব হয়নি।
জেলা প্রশাসক আমিনুর রহমান বলেন, সোমবার ঝড়ের পর থেকে জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার বিকালে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
নাটোর
কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে রোববার বিকালে জেলায় বিদ্যুতের সংকট শুরু হয়। এর মধ্যে মঙ্গলবার যোগ হয় গ্রিড বিপর্যয়।
নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার কিছু পর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল ও পাঁচটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ ছিল না। সদর হাসপাতালে সোমবার দুপুরে বিদ্যুত এলেও সন্ধা সোয়া ছয়টার দিকে আবার বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় দ্বিতীয়দফা কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পরে এলেও তা নিয়মিত চালু ছিল না।
“এতে রোগীদের চিকিৎসা সেবা বাধাগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে বিদ্যুতের অভাবে এক্সরে মেশিন বন্ধ ছিল। এছাড়া রোগ নির্ণয় যন্ত্রগুলো (এনালাইজার) অকেজো হয়ে পড়ে। বৈদ্যুতিক পাখা বন্ধ থাকায় রোগীরা গরমে ছটফট করতে থাকে। চার্জার লাইট ও মোমবাতি দিয়ে আলোর ব্যবস্থা হলেও অস্ত্রোপোচার করা যায়নি। একই ধরনের সমস্যা হয় জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও।”
শহরের অন্তত ১০ জন মানুষ জানান, বিদ্যুত সরবরাহ না থাকায় তাদের মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
শহরের মিরপাড়া মহল্লার আঁখি খাতুন বলেন, একটানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় তার বাসার ফ্রিজে থাকা সব মাছ ও মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তিনি দুপুরের খাবার তৈরি করতে পারেননি।
অটোরিকশা চালক মিজানুর রহমান বলেন, “আমি দুইদিন গাড়ি রাস্তায় নামাতে পারিনি। আজ মঙ্গলবার বিদ্যুৎ আসার পর চার্জ দিয়ে রাস্তায় এসেছি। রাস্তাতেও গাড়ির খুব সঙ্কট। ব্যাটারি চার্জ দিতে না পারায় এর কারণ।”
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক বেলাল উদ্দিন জানান, জেলার সর্বত্রই ঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো মেরামত করতে অনেক সময় ও লোকবল দরকার। এ কারণে কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুত সরবরাহ করা গেলেও অধিকাংশ স্থানে এখনও বিদ্যুত দেয়া যায়নি। তবে হাসপাতাল ক্লিনিক গুলোতে বিদ্যুৎ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরবরাহ করা হচ্ছে।
পটুয়াখালী
জেলায় প্রায় পাচঁ ঘণ্টা বিদ্যুত না থাকায় পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম স্থবির হওয়ায় ভর্তি বিভিন্ন ওয়ার্ডে চরম ভোগান্তিতে ছিলেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না ছিল না।
জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আব্দুর রহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গরমে দুর্ভোগ আর শিশু ওয়ার্ডে সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয়।
কলাপাড়া, দশমিনা, মির্জাগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন হাসাপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
কলাপাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জে এইচ খান লেলিন জানান, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় নিওমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদেও নিয়ে। প্রতিদিন ৩ বার করে তাদের নেবুলাইজ করতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকার ফলে শিশুদের গ্যাস দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে কয়েকটি শিশু আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন সেলিম মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চিকিৎসা সেবা দিতে রোগীদের অক্সিজেন খুবই প্রয়োজন। বিদ্যুৎ না থাকলে বিশেষ করে শিশুদের সেবা দিতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। সাথে গরমে তো আরও সমস্যার সৃষ্টি হয় শিশু রোগীর।
রংপুর
টানা চার ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় স্থবির হয়ে পড়ে রংপুরের জনজীবন। থেমে যায় কল-কারখানার চাকা। বিঘ্নিত হয় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। অচল হয়ে পড়ে পেট্রোল পাম্পগুলো।
দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় রংপুরে বৈশাখের খরতাপে জনজীবনে হাপিত্যেশ দেখা দেয়।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, “দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় এ অঞ্চলের কল-কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। গরমে স্থবির হয়ে পড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।”
বিদ্যুতের অভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রোগীদের হাঁসফাঁস অবস্থা সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসাধিন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন এক রোগীর ভাই রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালি গ্রামের তৈয়ব আলী বলেন, “বিদ্যুৎ যাওয়ার পর মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আবার চলে যায়। গরমে রোগীর খুব কষ্ট হয়েছে।”
হাসপাতালের উপপরিচালক অজয় কুমার রায় বলেন, “দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসা সেবায় বিঘ্ন হয়। হাসপাতালের ১৩টি লিফট ও এসি বন্ধ রাখা হয়। তবে নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে সকল ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।”
তবে হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের প্রধান মারুফুল ইসলাম বলেন, “জেনারেটর সংযোগ লাইন ত্রুটি থাকায় বার্ন ইউনিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ফলে চিকিৎসাধিন রোগীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন”।
রংপুর পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় অধিকাংশ পাম্প চালু রাখা সম্ভব হয়নি”।
সিরাজগঞ্জ
জেলার সরকারি, বেসরকারি অফিস, হাসপাতাল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িগুলোতে সকলকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আকরামুজ্জামান জানান, বিদ্যুৎ চলে যাবার পর হাসপাতালের ২টি ভবনের একটিতে জেনারেটর ব্যবহার করে সচল রাখা হয়। অপরটিতে ওয়ার্ড প্রতি একটি ফ্যান ও একটি লাইট ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
সিরাজগঞ্জ কারাগারের সুপার আল-মামুন জানান, বিদ্যুৎবিহীন সময়ে কারাগারের অভ্যন্তরে ভ্যাপসা গরমে আসামিরা নানা ভোগান্তিতে পড়েছিল। এছাড়াও অফিশিয়াল কার্যক্রমেও এর প্রভাব পড়েছে। জরুরি কাজে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ ছিল।
বগুড়া
বগুড়ায় তিন ঘন্টারও অধিক সময় বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। একদিকে অসহ্য গরম, অন্যদিকে বিদ্যুৎবিহীন এমন অবস্থায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে।