পুলিশের সামনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমুল হক মিরুর গুলিতেই সাংবাদিক শিমুলের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Published : 04 Feb 2017, 12:13 PM
শাহজাদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিজয় মাহমুদকে বৃহস্পতিবার মারধর করার অভিযোগে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ মেয়র মিরুর বাড়ি ঘেরাও করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
এ সময় দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল গুলিবিদ্ধ হয়ে পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বলেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পুলিশ সেখানে যথাসময়ে উপস্থিত হয়েছিল।
“ঘটনার সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। মেয়রকে বারবার বারণ করার পরও তিনি গুলি ছোড়েন। একাধিক গুলি করেন মেয়র। অন্য কোনো পক্ষ গুলি করেনি।”
তিনি বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক, যা আমাদের সামনেই ঘটেছে। অপরাধী যত ক্ষমতাশালীই হোক, আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।”
ঘটনার পর মেয়রের বাড়ি থেকে ৪৩টি গুলি ও ঘটনাস্থল থেকে ৬টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
মেয়র মিরুকে গ্রেপ্তারের জন্য শুক্রবার রাত থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার ঘটনার পর মেয়র মিরু দাবি করেছিলেন, প্রতিপক্ষের গুলির জবাবে তিনি এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন।
জানাজা অনুষ্ঠানে শাহজাদপুরের সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন, সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন আল রাজিব, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।
সাংবাদিকের মৃত্যুর পর থেকে উত্তেজনা চলছে এই ছোট্ট পৌর শহরটিতে। মেয়রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে পৌর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ভিপি রহিম ও ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের কর্মী-সমর্থকরা।
পরে তারা শাহজাদপুর উপজেলায় শনিবার অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করলে তা সফল হয়। শনিবার সকাল-দুপুর সব ধরনের দোকানপাট ও যানবাহন বন্ধ ছিল।
শিমুল হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে মেয়রসহ ১৮ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কমল দেবনাথ বলেন, ঘটনা তদন্তের পাশাপাশি পুলিশ এখন পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে।
এছাড়া মেয়রের শটগান জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহজাদপুর থানার ওসি রেজাউল।
নানি-নাতির দাফন
প্রথমে সকাল সাড়ে ১০টায় শাহজাদপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ও পরে শিমুলের বাড়ি মাদলা গ্রামের কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হয় শিমুল ও তার নানিকে।
শিমুলের নানির আলাদা জানাজা হয়। পরে মাদলা গ্রামের কবরস্থনে দুইজনকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।
শুক্রবার শিমুলের মৃত্যু খবর আসার পরপর তার নানি মারা যান।