মালি ও আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা ভণ্ডুরের দুদিনের মাথায় জামায়াত-শিবিরকে চাকরি দিচ্ছে অভিযোগ তুলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের একই ঘটনা ঘটিয়েছেন নগর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
Published : 23 Dec 2016, 02:31 PM
এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কয়েকটি পদে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা, বেলা ১০টা ও বিকাল ৩টায় নির্ধারিত নিয়োগ পরীক্ষা হতে পারেনি।
এর আগে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের আয়া ও মালি পদের নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।
উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের বের করে দেন। এছাড়া পরীক্ষা নিতে আসা শিক্ষকদেরও বাধা দেওয়া হয়।”
প্রক্টর মুজিবুল হক আজাদ খান বলছেন, “একদল যুবক শ্রেণির মানুষ ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান দিতে দিতে এসে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে।”
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার নিয়োগ পরীক্ষায় বাধা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের চাকরি দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই আমরা এই নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের সঙ্গে আলোচনায় আসতে হবে, নয়তো আন্দোলন চলবে।”
আইসিটি সেন্টারের প্রশাসক খাদেমুল ইসলাম মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিবলিওগ্রাফার কাম রেফারেন্স সহকারীর দুটি ও ক্যাটালগারের একটি পদের নিয়োগ পরীক্ষায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় ৭০ জন, সকাল ১০টায় ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ২০টি পদে ৩১০০ জন এবং বিকাল ৩টায় গ্রন্থাগার সহকারীসহ চারটি পদে ১৫০ জনের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
জামায়াত-শিবিরকে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে উপ-উপাচার্য বলেন, বিগত চার বছর কোনো নিয়োগই হয়নি। নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় যারা টিকবে তাদের চাকরি হবে।
“জামায়াত-শিবিরকে চাকরি দেওয়ার কথাটি একেবারেই ভিত্তিহীন।”
এভাবে বাইরে থেকে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে বাধা দেওয়া যায় কি না প্রশ্নের জবাবে উপ-উপাচার্য বলেন, এ বিষয়গুলো বন্ধ করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এগিয়ে আসতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে।
উপ-উপাচার্যসহ ২ জনকে প্রাণনাশের হুমকি
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করতে উপ-উপাচার্য ও আইসিটি সেন্টারের প্রশাসককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপ-উপাচার্য বলেন, “নগরীর টিকাপাড়ায় আমার বাড়িতে গিয়ে ৫০-৬০ জনের একটি দল নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করতে বলে। না করলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।”
আইসিটি সেন্টারের প্রশাসক খাদেমুল ইসলাম মোল্লা বলেন, “মোটরসাইকেলে করে ১০-১২ জনের একটি দল আমার বাড়ি গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গেছে। তবে তাদের আমি চিনতে পারিনি।”
মতিহার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহাবুব আলম, “বৃহস্পতিবার চৌধুরী সারওয়ার জাহান প্রাণনাশের হুমকির কথা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। লিখিতভাবে না জানানোর কারণে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি।”
তবে পুলিশ নিরাপত্তার দিকে নজর রাখছে বলে জানান মাহাবুব।