শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বোমাবাজির পর ১৭ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে উপাচার্যকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
Published : 21 Dec 2016, 03:18 PM
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ‘অস্বচ্ছতার’ বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন দমনের জন্য উপাচার্য আমিনুল হক ভুঁইয়া পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগও তুলেছেন এই নেতা-কর্মীরা।
প্রশাসনিক ভবন-২-এর কার্যালয়ে বুধবার বেলা ২টা থেকে তারা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন আন্দোলনকারীরা।
রাত ১টায় আন্দোলনকারীদের সামনে এসে রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসাইন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সিন্ডিকেট মিটিংয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি গুরুত্বসহকালে বিবেচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার সকালেও উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর পুলিশ রাতে শাহপরাণ, বঙ্গবন্ধু ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে অভিযান চালিয়ে ধারালো অস্ত্র, হাতবোমা ও গুলি উদ্ধার করে। বুধবার সকালে হল বন্ধের ঘোষণা আসে।
মুখপাত্র সারওয়ার বলেন, গত ২৬ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিনসহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত ইমতিয়াজ হৃদয়কে আটক করে জালালাবাদ থানার পুলিশ।
“আটক হওয়ার পর পুলিশ জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো মামলা করেনি। প্রশাসন জালিয়াত চক্রের মূল হোতাদের আড়াল করার প্রতিবাদে গত ৪ ডিসেম্বর থেকে আমরা আন্দোলন করে আসছি।”
এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণ করে বলে সারওয়ারের অভিযোগ।
তিনি বলেন, “আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে উপাচার্য ক্যাম্পাসে দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন। ক্যম্পাস সচল করার ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হবে।”
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর প্রশাসনের ‘অস্বচ্ছতা’ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণের প্রতিবাদে বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণা দেয় ক্যাম্পাসের সব সাংস্কৃতিক সংগঠন।
শিক্ষার্থীদের অন্দোলনের নিয়ে জরুরি সভার কথা থাকলেও পরে তা আর হয়নি বলে জানিয়েছেন সহকারী প্রক্টর জাহিদ হাসান।
এ বিষয়ে উপাচার্য আমিনুল হক ভুঁইয়ার মোবাইল ফোনে যোগায়োগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জালালাবাদ থানার ওসি আকতার হোসেন বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নজরে রেখেছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা হচ্ছে।