গাইবান্ধায় চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমি থেকে উচ্ছেদের সময় সাঁওতালদের ঘরে পুলিশের আগুন দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান।
Published : 13 Dec 2016, 07:51 PM
মঙ্গলবার মাদারীপুরের রাজৈরে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সাঁওতালদের ঘরে পুলিশের অগ্নিসংযোগের বিষয়টির তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে।”
সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে চিনিকলের জন্য অধিগ্রহণ করা বিরোধপূর্ণ জমি থেকে কয়েকশ ঘর তুলে বসবাস করা সাঁওতালদের গত ৬ নভেম্বর উচ্ছেদ করা হয়। সে সময় সংঘর্ষ বাঁধে এবং সাঁওতালদের বাড়িঘরে লুটপাট, ভাংচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায়। ওই ঘটনায় নিহত হন তিন সাঁওতাল, আহত হন অনেকে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উপর গুলিবর্ষণের ওই ঘটনায় সমালোচনা হয় দেশজুড়ে।
এর প্রায় এক মাস পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসা একটি ভিডিওর ভিত্তিতে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাঁওতাল পল্লীর ভেতরে পুলিশ সদস্যরা গুলি ছুড়ছেন। কয়েকজন পুলিশ সদস্য একটি ঘরে লাথি মারেন এবং পরে এক পুলিশ সদস্য ওই ঘরে আগুন দেন।
পুলিশের সঙ্গে সাধারণ পোশাকে থাকা আরেকজন আগুন অন্য ঘরে ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেন।
ভিডিওর একটি অংশে আরও কয়েকটি ঘরে আগুন দিতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। তাদের মাথায় ছিল হেলমেট, একজনের পোশাকের পিঠে ডিবি, আরেকজনের পুলিশ লেখা ছিল।
তবে পুলিশ বলছে, তাদের কোনো সদস্য আগুন দেয়নি, ভিডিওর বিষয়েও তাদের জানা নেই।
শাজাহান খান বলেন, “সরকারি জায়গায় কোনো স্থাপনা থাকলে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সরকার তা সরিয়ে দিতে পারে। যদি কেউ এমনিতে না সরে সেক্ষেত্রে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে পারে সরকার।”
পুলিশের অগ্নিসংযোগের ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার বিষয়ে তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
রাজৈরের চৌয়ারীবাড়ি-ভেন্নাবাড়ি মতিলাল উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এদিন একটি সেতুর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। পরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার ও নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী মলয় কুমার চক্রবর্তী, রাজৈর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রতীক বারুরীসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।