‘ডাক্তারকে গালাগালের প্রতিবাদ করায়’ শরীয়তপুরে এক পুলিশ সদস্যের কানের পর্দা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে, যিনি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগ্নে।
Published : 01 Nov 2016, 07:16 PM
মঙ্গলবারের এ ঘটনায় আহত পুলিশের নায়েক সেলিমুজ্জামানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় শরীয়তপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন হাওলাদার, তার ভাগ্নে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার ঢালী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাগরণ শেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ডাক্তার দেবাশীষ সাহা বলেন, “চাহিদা মতো সার্টিফিকেট না দেওয়াতে আমাকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার ভাগ্নে অফিস চলাকালীন সময়ে গালাগাল দেন।
“এ সময় আমার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা এক পুলিশ সদস্য প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেন ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হাওলাদারের ভাগ্নে ছাত্রলীগ নেতা আকতার ঢালী।”
শরীয়তপুর হাসপাতালের আরএমও (ভারপ্রাপ্ত) ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, শরীয়তপুর সদরের কাশিপুর গ্রামের হোসেন খন্দকার (৩৫) গত ১৫ অক্টোবর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।
সুমন জানান, মঙ্গলবার রোগীর আত্মীয় দক্ষিণ বালুচরা গ্রামের জাগরণ শেক, আলমগীরের ভাগ্নে আকতার হোসেন ঢালী শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এসে একটি সনদ লিখে দিতে বলেন, যেন মাথায় আঘাত রয়েছে বলে উল্লেখ থাকে।
“পরে শরীয়তপুর সিভিল সার্জনের নির্দেশে রোগীকে পুনরায় পরীক্ষা করে দেখা যায় তার মাথায় আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। তাই দেবাশীষ তাদের চাহিদা মতো সনদ দিতে অপারগতা জানান।”
সুমন বলেন, এরপর আক্তার ঢালী, জাগরণ শেখ ও রোগীর আত্মীয়রা ডাক্তার দেবাশীষকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেন। এ সময় ডাক্তারের এক রোগী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গার্ড পুলিশের নায়েক সেলিমুজ্জামান প্রতিবাদ করলে আকতার ঢালী তার উপর চড়াও হন।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান ঘটনাস্থলে যান বলে জানান সুমন।
পালং মডেল থানার ওসি খলিলুর রহমান জানান, সিভিল সার্জনসহ সাত ডাক্তারের স্বাক্ষরে শরীয়তপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন হাওলাদার, আওয়ামী লীগ নেতা জাগরণ শেক ও আলমগীরের ভাগ্নে ছাত্রলীগ নেতা আকতার ঢালিকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধাদান ও অনৈতিকভাবে জোরপূর্বক সনদপত্র আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশকে মারধর করার অপরাধে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইননানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন হাওলাদার, আওয়ামী লীগ নেতা জাগরণ শেক ও আকতার ঢালীকে কয়েকবার ফোন করে বন্ধ পাওয়া গেছে।