কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রির ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে খাদ্য অফিসে তালা ঝুলিয়েছেন স্থানীয়রা।
Published : 03 Oct 2016, 08:17 PM
সোমবার উমর মজিদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সরদারের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে।
ইউএনওর অপসারণের দাবি করে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশও হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য অফিস জানায়, রাজারহাট উপজেলায় সাতটি ইউনিয়নে ১৯ জন ডিলার নিয়োগের বিপরীতে ৬৩ জন ব্যবসায়ী আবেদন করেন। যাচাই-বাছাই শেষে সোমবার দুপুরে চূড়ান্ত তালিকা নোটিশ বোর্ডে টানানো হয়।
প্রতি ৫০০ ভোক্তার বিপরীতে একজন করে ডিলার নিয়োগ করা হয়। সাতটি ইউনিয়নে ১০ হাজার ৬০০ জন হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ফেয়ার প্রাইজ কার্ডের মাল বিতরণ করা হবে। এজন্য ১৯ জন ডিলারকে চূড়ান্ত করা হয়।
উমর মজিদ ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরদার বলেন, তারা সাত চেয়ারম্যান একটি করে ডিলার নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিলেন; কিন্তু কমিটি তা বিবেচনা করেননি, বরং উৎকোচের বিনিময়ে জামায়াত-বিএনপির লোকজনকে মনোনীত করে।
“আমি একজন প্রকৃত ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করেছি। তারা তা না করে ওই স্থলে বিএনপির কর্মী আমিনুল ইসলাম দুলালকে (৪০)মনোনীত করেছেন।
“এজন্য আমি বিক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা খাদ্য বিভাগের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। পাশাপাশি আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
রাজারহাট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খয়বর হোসেন সরকার বলেন, ডিলার নিয়োগে উমর মজিদ ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরদারের মনোনীত ডিলার নিয়োগ না পাওয়ায় তিনি খাদ্য অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তিনি ও তার অফিসের কর্মচারীরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ডিলার নিয়োগ কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে মিটিংয়ে আছি, পরে কথা হবে।”
রাজারহাট থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। কোনোপক্ষই এখন পর্যন্ত রিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি করা হবে। ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’- এই স্লোগানে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে হতদরিদ্রদের মাঝে বছরে সাড়ে সাত লাখ টন চাল বিতরণ করা হবে।
মার্চ, এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর- এই পাঁচ মাস এই সুবিধা পাবে। মাসে ৩০ কেজি পর্যন্ত চাল কিনতে পারবে তারা। নারী, বিধবা ও প্রতিবন্ধী নারী প্রধান পরিবারকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে এ কর্মসূচিতে।