ফরিদপুর শহরে এক নবজাতককে চিকিৎসক মৃত ঘোষণার ছয় ঘণ্টা পর দাফনের সময় কেঁদে ওঠার ঘটনা ঘটেছে।
Published : 22 Sep 2016, 04:37 PM
বৃহস্পতিবার সকালের এ ঘটনায় ‘ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের’ বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করেছেন নবজাতকের বাবা ফরিদপুর জেলা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় নাজমুল হুদা মিঠু ও তার পরিবার।
শহরের আলীপুর কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুর রব বলেন, নবজাতককে বুধবার রাত ৩টার দিকে নিয়ে এলে তাদের সকালে আসার জন্য বলা হয়। তখন তারা কার্টনে রাখা নবজাতককে কবরস্থানে রেখে চলে যায়।
“বৃহস্পতিবার সকালে আমরা শিশুটিকে কবর দিতে গেলে নড়েচড়ে কেঁদে ওঠে। তখনই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
তিনি চিকিৎসকে ইঙ্গিত করে বলেন, “সেবা নামে এ কেমন আচরণ? একটি জীবিত শিশুকে মৃত বলে কবরস্থানে পাঠিয়ে সারারাত ফেলে রাখা হল। এর বিচার হওয়া উচিত।”
নবজাতকের নানা মো. আবুল কালাম মিয়া অভিযোগ করেন, প্রসূতি নাজনীন আক্তার পপিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক রিজিয়া আলম তাকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে বলেন। তবে পরে স্বাভাবিকভাবেই কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
“এর দুই ঘণ্টা পর চিকিৎসক রিজিয়া নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন।”
নবজাতকের বাবা মিঠু বলেন, “হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক ও তার সহযোগীরা নিশ্চিতভাবেই দায়িত্বে অবহেলা করেছেন।
“আমার মতো আর কোনো বাবার ভাগ্যে যেন এমন দুর্ভোগ না ঘটে।”
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক রিজিয়া আলম বলেন, হাসপাতালে আসন না থাকায় প্রথমে তাদের অন্য কোথাও যেতে বলা হয়। তারা যায়নি। পরে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হয়।
“দীর্ঘক্ষণেও বাচ্চার পালস ও রেসপন্স না পাওয়ায় মৃত বিবেচনায় স্বজনদের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়।”
হাসপাতালের পরিচালনা কমিটির সদস্য শওকত আলী জাহিদ বলেন, “এটি একটি অলৌকিক ঘটনা।”
পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সালাউদ্দিন ফরিদ বলেন, “নবজাতক অপুষ্ট ছিল। ছয় মাসেরও আগে ভূমিষ্ঠ হয়েছে।
“আমরা জরুরি সভা করে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। কর্তব্যে কারও অবহেলার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন অরুণকান্তি বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। কোনো রোগী নিয়মিত হোক আর না হোক, চিকিৎসকের কাছে এলে তাকে সেবা দিতে হবে, এটাই সত্য। কেন এমন হল বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”