বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের সময় মাগুরা সদরে ট্রাকে পেট্রোল বোমায় পাঁচ শ্রমিক নিহত হওয়ার এক বছরেও মামলার বিচার শুরু হয়নি।
Published : 21 Mar 2016, 12:17 PM
গত বছরের ২১ মার্চ সন্ধ্যায় মাগুরা-যশোর সড়কের মঘির ঢালে পেট্রোল বোমার আগুনে দগ্ধ হন নয় বালু শ্রমিক, যাদের মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। বাকিরা গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন।
নিহতরা হলেন রওশন আলী বিশ্বাস, মতিন বিশ্বাস, শাকিল আহমেদ, ইয়াদুল ও ইমরান। হতাহত নয় শ্রমিকের বাড়ি মাগুরা সদরের মালিক গ্রামে।
পরদিন মাগুরা সদর থানার এএসআই আব্দুস সালাম বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আলী আহমেদসহ ২৬ জনকে আসামি করে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই বছরের ১৮ অগাস্ট মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদসহ ২৩ জনের নামে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি ইমাউল হক।
ওই কারণে তিনি অভিযোগপত্রে নারাজি আবেদন করেছেন। আগামী ২৯ মার্চ নারাজি আবেদনের শুনানি হবে বলে জানান তিনি।
মাগুরার পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল্লাহ বলেন, পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
তিন আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ভালো নেই স্বজনরা
রোববার সকালে সদর উপজেলার মালিক গ্রামে নিহত রওশন আলীর বাড়ি গিয়ে কথা হয় তার বিধবা স্ত্রী সুকুরন নেছার সঙ্গে।
কেমন আছেন জিজ্ঞেস করলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সুকুরন নেছা।
“নাবালক তিনটি সন্তান রেখে স্বামী দুনিয়া ছেড়েছে। স্বামীর বেঁচে থাকার সময় দিনমজুরির টাকায় দিনে একবার খাবার জুটলেও সুখ ছিল।”
সরকার কিছু আর্থিক সহয়তা করেছে বলে জানান সুকুরন।
“এক বছর হলেও এখনো আমি রাতে ঘুমতে পারি না। চোখ বুজলেই আমার মনি আমাকে আম্মা বলে ডাকে।”
এমন কোনো রাত নেই চোখের জলে বালিশ ভেজে না বলে ডুকরে কেঁদে ওঠেন শাকিরন।
এদিকে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে বেঁচে যাওয়া কর্মক্ষম মানুষগুলো এখন পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদের মধ্যে ইলিয়াছ ও নাজমুল জানান, সরকার তাদের এক মাস ঢাকায় চিকিৎসা করিয়েছে, কিন্তু তারা এখনও পর্যন্ত সুস্থ হতে পারেননি। এখোনও ভালোভাবে চোখে দেখতে ও ঠিকমত কানে শুনতে পান না। রোদে গেলে সারা শরীরের জ্বালা যন্ত্রণা হয়। কাজে যেতে পারেন না।
অগ্নিদগ্ধদের সরকার নগদ অর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো আর্থিক সহয়তা পাননি বলে জানান।