পুরোহিত হত্যায় ‘দেশীয় জঙ্গিরাই জড়িত’

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে হিন্দু পুরোহিত হত্যাকাণ্ডে দেশীয় জঙ্গিরাই জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2016, 06:09 PM
Updated : 22 Feb 2016, 06:09 PM

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “দেশীয় কোনো ধর্মান্ধ গোষ্ঠীই এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এখানে আইএসের হাত নেই। এ এলাকায় আইএসের কোনো অস্তিত্বই নেই।”

হিন্দু পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায় (৫০) হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টা পর দায় স্বীকার করে আইএসের বার্তার খবর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সাইট ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে।

দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাপোতা গ্রামে করতোয়া নদীর পাড়ে সন্তগৌরীয় মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায় রোববার সকালে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তিনজনকে আটকের খবর দিয়েছে।তাদের দুজন জেএমবি সদস্য এবং অন্যজন ইসলামী ছাত্রশিবিরের স্থানীয় নেতা বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে দেবীগঞ্জ থানার ওসি বাবুল আক্তার জানিয়েছেন।

আটকরা হলেন খলিলুর রহমান (৫৫), বাবুল হোসেন (২৮) ও জাহাঙ্গীর হোসেন। এদের মধ্যে খলিলুর ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্টের বোমা হামলা মামলার আসামি।

ওসি বাবুল আক্তার জানান, তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য এবং আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যসহ সার্বিক বিষয় তত্ত্বাবধানের জন্য একটি তদারক দল গঠন করা হয়েছে।

আট সদস্যবিশিষ্ট এই দলের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ।

তিনি বলেন, পুরোহিত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একযোগে তদন্ত করা হচ্ছে।

“অতীতে মঠের মহারাজ পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব ও জমিজমা নিয়ে বিরোধসহ প্রাপ্ত সব তথ্য বিবেচনায় নিয়ে তদন্তকাজ চলছে।”

তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।

পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার দাবি, সম্প্রতি এমন বিভিন্ন ঘটনা একই কায়দায় ঘটানো হয়েছে। সেসব ঘটনায় দেশীয় জঙ্গিদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে এই ঘটানাও যে দেশীয় জঙ্গিগোষ্ঠী ঘটিয়েছে সেটা এক প্রকার নিশ্চিত করে বলা যায়।

যজ্ঞেশ্বর রায়কে হত্যায় অংশ নেয় তিনজন। তাদের সাথে আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্রও ছিল।

গত বছর রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা, বগুড়ায় শিয়া মসজিদে হামলা এবং ঢাকার আশুলিয়ায় তল্লাশি চৌকিতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে মোটরসাইকেলে তিনজন ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিল। ওই হামলাকারীদের সঙ্গেও আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র ছিল।

এসব হত্যাকাণ্ডের কোনোটির দায় আইএস, কোনোটির দায় আল-কায়েদা স্বীকারের খবর এলেও সেগুলো ভুয়া বলে পুলিশের দাবি।