বাণিজ্যিক উৎপাদনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে ৬৬০ মেগাওয়াট

দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট ২০২৩ সালের জুন মাসে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2022, 10:08 AM
Updated : 19 Dec 2022, 10:08 AM

নির্মাণকাজ শুরুর এক যুগ পর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে বাগেরহাটের রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র; এখান থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। 

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত বিদ্যুৎ গত শনিবার রাত থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া শুরু করেছে বলে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম জানান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৬০ মেগাওয়াট গোপালগঞ্জের আমিন বাজার হয়ে ঢাকার জাতীয় গ্রিডে এবং ২০০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছে।”

এরই মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটেরও ৭৯ দশমিক ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে উল্লেখ করে উপ-ব্যবস্থাপক আরও বলেন, “সবকিছু ঠিক থাকলে দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ২০২৩ সালের জুন মাসে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।”

২০১০ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাতীয় তাপ বিদ্যুৎ করপোরেশনের (এনটিপিসি) মধ্যে বাগেরহাটের রামপালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে সমঝোতা হয়। এর দুই বছর পর ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি এনটিপিসির সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। তবে শুরু থেকেই সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন পরিবেশবাদীরা।

রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা রবীন্দ্র কুমার সাংবাদিকদের বলেন, “ধীরে ধীরে আমরা মেশিনের কার্যক্রম বাড়াচ্ছি। আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে স্থানীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জাতীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে এটি ভূমিকা রাখবে।”

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা একটি ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছি। পরিবেশগত দিক বিবেচনা করে সব ধরনের কারিগরি কাজ করা হয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপশি এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।”

বিআইএফপিসিএল কোম্পানির অধীনে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট মূলত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নামে পরিচিত। বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় এক হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।

গত ৬ সেপ্টেম্বর ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে কয়লাচালিত মৈত্রী পাওয়ার প্ল্যান্টের ইউনিট-১ এর উদ্বোধন করেন।

এর আগে চলতি বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়।