ঢাকার মোহাম্মদপুরের আশেপাশে ডাব বিক্রি করতেন সুজন মিয়া। চার সদস্যের পরিবারের সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন ভাইয়ের ছেলের বিয়েতে। কিন্তু সেখান থেকে আর ঢাকায় ফেরা হলো তাদের কারোরই।
সোমবার বিকালে ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে এগার সিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনের দুর্ঘটনায় হারিয়ে গেলে পুরো পরিবারটিই।
তারা হলেন- নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বনাটী গ্রামের বাসিন্দা রইছ উদ্দিনের ছেলে সুজন মিয়া (৩৫), তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩০), তাদের সন্তান সজিব মিয়া (৮) ও ইব্রাহীম মিয়া (৫)।
একই ট্রেনে ছিলেন সুজনের ভাই স্বপন মিয়াও। তবে সামনের দিকের বগিতে থাকায় বেঁচে যান তিনি।
ভাইয়ের পুরো পরিবার হারিয়ে শোকাহত স্বপন জানান, তার ভাই পরিবার নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভ্যানে করে আশেপাশের এলাকায় ডাব বিক্রি করতেন তিনি। তাতেই দুই ছেলে ও স্ত্রীসহ কোনো রকম দিন কাটতো সুজন মিয়ার।
স্বপন আরও জানান, এর মধ্যেই শুক্রবার ছিল তাদের ভাইয়ের ছেলের বিয়ে। সেজন্য বৃহস্পতিবার নিজ বাড়ি নান্দাইলে আসেন সুজন মিয়া। সঙ্গে ছিল পরিবারের অন্যরাও। ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে সোমবার ঢাকায় ফিরতে এগারসিন্ধু ট্রেন উঠেছিলেন তারা।
“কিন্তু ট্রেন দুর্ঘটনায় সবাই মারা গেছে। আমিও ঐ ট্রেনের ৫ নম্বর বগিতে ছিলাম, তাই বেঁচে গেছি”- বলেন স্বপন মিয়া।
এই ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন নান্দাইলের আরেক নারী হীরা আক্তার। তিনি নান্দাইলের মুশুল্লি ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন।
যাত্রীবাহী এগার সিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সোমবার ভৈরব থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে ক্রসিং পার হচ্ছিল। সে সময় একটি মালবাহী ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। সেটি ধাক্কা দেয় এগার সিন্ধুর ট্রেনের শেষ দুই বগিতে।
এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি দুমড়ে মুচড়ে উল্টে যায়। এতে ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জনের বেশি।
আহতদের স্থানীয় হাসপাতালের পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন