এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা।
Published : 06 Oct 2023, 09:39 PM
গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত জনপদ সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, বাজার-স্কুল-বাসাবাড়ি।
এতে চরম বিপাকে পড়েছেন শিল্পাঞ্চলে বসবাসরত লাখ লাখ মানুষ।
বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
জলাবদ্ধতার এমন পরিস্থিতি সাভার পৌর এলাকাতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ড এলাকার মাসরুম সেন্টারের সামনে, মডেল মসজিদের পূর্ব পাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক কলোনি, রেডিও কলোনি, গেন্ডা, সোবহানবাগ, রাজাশন, মজিদপুর, ভাগলপুর, বালুঘাট, বনপুকুরসহ পৌরসভার অধিকাংশ মহল্লায় পানি জমে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আর সড়কে খানাখন্দের কারণে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ। পৌর এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
পৌর এলাকার সিআরপি রোডে গিয়ে দেখা যায়, পুরো সড়কটিতেই হাঁটু সমান পানি জমে আছে। আর এতে সড়কটি ধরে চলাচলকারীদের পড়তে হয়েছে দুর্ভোগে।
প্রবল বর্ষণের কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল ও ডিইপিজেড এলাকায় কোথাও কোমর পানি আবার কোথাও হাঁটু পানি।
গণপরিবহন সংকটে অনেকেই বাধ্য হয়ে হেঁটে পানি ভেঙে চলাচল করছেন।
শুধু সড়কই নয়, জামগড়া, ইউনিক, চিত্রশাইল, শিমুলতলা, নরসিংহপুর, কবিরপুর, ভাদাইল ও গাজীরচটসহ আশপাশের প্রায় প্রতিটি এলাকায় জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে।
ডিইপিজেড এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক নার্গিস আক্তার বলেন, “সারা সপ্তাহ আমরা গার্মেন্টসে কাজ করে শুক্রবারের দিনটা বাজার করি। কিন্তু গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে টানা বৃষ্টির কারণে আশুলিয়ার রাস্তাঘাট সব তলিয়ে গেছে। জামগড়া থেকে কয়েকগুণ বেশি ভাড়ায় রিকশা নিয়ে বাইপাইল কাঁচাবাজারের আড়তে এসে দেখি, পানি ঢুকে বাজার বন্ধ। পানি আমার বাসাতেও উঠে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সবচাইতে বেশি কষ্ট আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের।”
সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ডের দিলখুশা সুপার মার্কেটের পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, “সামান্য বৃষ্টি হলেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কিছু কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। তাছাড়া সড়কের পাশে ফেলা ময়লা বৃষ্টির পানিতে ভাসতে থাকে। যা থেকে ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ।”
পানি নেমে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা ও নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করায় এ দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি তার।
মজিদপুর এলাকার বাসিন্দা হাজী মোতালেব শিকদার বলেন, “পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় আমরা পানি বন্দি হয়ে পড়েছি। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। বাসা থেকে বের হতে পারছি না।”
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা দুলাল ড্রাইভার বলেন, “অল্প বৃষ্টি হলেই বাসার ভেতর পানি প্রবেশ করে। তাই এই এলাকার ভাড়াটিয়ারা বাসা ভাড়া নিতে চায় না। যাতায়াতেও নানা ধরনের সমস্যা হয়।”
সাভার পৌরসভার গেন্ডা টিয়াবাড়ি মহল্লার প্রায় অধিকাংশ বাড়ির ভেতরেই প্রবেশ করেছে ড্রেনের ময়লা পানি। এই এলাকার একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, আগে এদিকে যে খাল ছিল তা এখন ভরাট হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সাভার পৌরসভার মেয়র আবদুল গণি বলেন, “সাভারে ড্রেনেজ ব্যবস্থা অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনেক ভালো। আমরা ড্রেন পরিষ্কার রাখতে নিয়মিতই কাজ করে যাচ্ছি। এই দুদিন অতিবৃষ্টির কারণে একটু জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই এসব পানি নেমে যাবে।”