ওসি বলেন, “গ্রেপ্তারদের শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।”
Published : 25 May 2024, 09:35 PM
নওগাঁর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় আত্রাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের লোকজনের ওপর হামলার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।
এ ঘটনায় এক পক্ষের করা মামলায় আটজন গ্রেপ্তার হয়েছেন; অন্য পক্ষও থানায় এজাহার দিয়েছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা দিকে উপজেলার জয়সারা আব্বাসের মোড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এতে আত্রাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কৈ মাছ প্রতীকের এবাদুর রহমান প্রামাণিকের ভাই-ভাতিজা ও কর্মী-সমর্থকরা আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় করা মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলে রাব্বীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এবাদুর রহমানের মেয়ে রোকসানা আফরোজ বলেন, “তৃতীয় ধাপে হতে যাওয়া নির্বাচনে শুক্রবার ভোটের প্রচার-প্রচারণা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কর্মী-সমর্থকরা বাড়ি ফিরছিলেন।
“এসময় উপজেলার জয়সারা আব্বাসের মোড়ে পৌঁছলে কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলে রাব্বীর নেতৃত্বে লোহার রড, হকিস্টিক দিয়ে বাড়ি ফেরাদের ওপর হামলা চালায়।”
এ সময় জয়সারা গ্রামের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
হামলায় প্রার্থী এবাদুর রহমানের প্রামাণিকের ভাই শহিদুল ইসলাম, ভাতিজা মনিরুজ্জামান রনি, কর্মী জিহাদ হোসেন, শাহাদাত হোসেন ও উজ্জ্বল হোসেন আহত হন।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে তাদের আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর মধ্যে শহিদুল ইসলাম ও রনির অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
রোকসানা আফরোজ আরো জানান, তার বাবা একটানা তিনবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানিত্ব হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মমতাজ বেগমের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন রোকসানা আফরোজ।
আত্রাই থানার ওসি জহুরুল ইসলাম জানান, হামলার ঘটনায় রাতেই প্রার্থী এবাদুর রহমানের ভাই সাজেদুর রহমান বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলে শফিকুজ্জামান রাব্বীসহ উপজেলার গুড়নই গ্রামের তহিদুল ওরফে ইমান আলী ও হাফিজ উদ্দীন, সাহেবগঞ্জ মোল্লাপাড়ার আশিক রহমান, জগদাস গ্রামের আশরাফুল ইসলাম ও শহিদুল সরদার,চকবিষ্টপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মোজাফ্ফর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি জহুরুল ইসলাম আরও বলেন, “গ্রেপ্তারদের শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।”
এদিকে, হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এবাদুর রহমান।
তবে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের দাবি, প্রার্থী এবাদের লোকজন টাকা ছড়াচ্ছেন, এমন খবরে তার লোকজন জয়সারা যান। সেখানে তার কর্মীকে এবাদুর রহমানের ভাতিজা রনি মারপিট করেন। এরপর রনিকেও কয়েকটা বারি দেওয়া হয়েছে বলে মমতাজ বেগমের ভাষ্য।
এ ঘটনার জেরে ছেলে রাব্বী ছাড়াও তার পক্ষের আহাদ, আপু ও আশিকসহ সমর্থকদের মারপিট এবং একটি মোটরসাইকেল ভাঙা হয়েছে দাবি করে তিনি।
মমতাজ বেগম বলেন, “আহতদের আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে রাতে আমার ছেলের বউ দেখতে যান। তখন তাকে প্রার্থী এবাদুর রহমান মারপিট ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন।”
এছাড়া হাসপাতাল গেইটে তিনি নিজেও হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন মমতাজ বেগম।
তার পক্ষের লোকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় থানায় এজাহার দিয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, “তবে এখনও পুলিশ মামলা নেয়নি ।”
মমতাজ বেগমের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, “সেখানে কিছু ভুল ছিল। ভুল সংশোধন করে আনার জন্য বলা হয়েছে।”