৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এসব ডিলার আর প্রকাশ্যে নেই, তারা পণ্যও আর তুলছেন না।
Published : 30 Sep 2024, 06:51 PM
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল ও আটা বাগেরহাট পৌরসভায় খোলা বাজারে বিক্রির জন্য নিয়োজিত ডিলাররা সরকার পতনের পর ‘আত্মগোপনে’ চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার উপকারভোগী।
এ অবস্থায় উপকারভোগীদের সেবা দিতে সীমিত পরিসরে খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি করছেন খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মীরা। যদিও তাদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ওএমএসের উপকারভোগীরা জানান, খাদ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে যাদের ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছিলেন। ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এসব ডিলার আর প্রকাশ্যে নেই। ফলে তারা তাদের জন্য নির্ধারিত পণ্যও আর তুলছেন না।
এই পরিপ্রেক্ষিতে পৌরসভার নিন্ম আয়ের হাজার হাজার উপকারভোগী বিপাকে পড়েন। তাদের ভোগান্তি কমাতে খাদ্য অধিদপ্তর তাদের নিজস্ব উদ্যোগে খোলা বাজারের চাল ও আটা বিক্রি করছে।
খাদ্য অধিদপ্তর জানায়, বাগেরহাট পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে ১০ জন ডিলারের পাঁচটি পয়েন্ট ছিল। এখন সরকারি ছুটির দিন বাদে সপ্তাহের পাঁচ দিন শহরের মুণিগঞ্জ এলাকায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি করছে।
লাইনে দাঁড়ানো বাগেরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ অহিদুজ্জামানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা উপকারভোগীরা বলেন, এখানে অনেক ভিড়, ভোর রাত থেকে চাল ও আটা পাওয়ার জন্য সবাই লাইনে দাঁড়ায়। এখানে দিতে দেরি হয় ঠিকই তবে কেউ খালি হাতে ফেরেন না।
শেখ অহিদুজ্জামান বলেন, “আগে যাদের মাধ্যমে দেওয়া হতো সেখানে অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হত। চাল, আটা পাওয়ার জন্য আমরা নিজেরাই অনেক সময় ঠ্যালাঠ্যালি করছি, মারামারি করছি। নির্ধারিত মূল্যে চাল ও আটা পাওয়ায় খুশি উপকারভোগীরা।”
বাগেরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি-ফুড) শাকিল আহমেদ বলেন, “পৌরসভা এলাকায় নিয়োগকৃত ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে ডিলাররা উপস্থিত হয়ে চাল, আটা উত্তোলন করতে পারছেন না। তাই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নিজস্ব জনবল দিয়ে ওএমএস কার্যক্রম চলমান রেখেছি।
“একজন উপকারভোগী প্রতিদিন পাঁচ কেজি আটা ও পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারবেন। তবে উপকারভোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রে পরিমাণ কমিয়ে সবাইকে আমরা চাল, আটা দিচ্ছি। জনবল কম ও কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় উপকারভোগীদের সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ওএমএস কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানানো হয়। তাদের সহযোগিতা না পাওয়ায় এই কার্যক্রম ঝুঁকির মধ্যে দিয়েই চালাতে হচ্ছে। প্রতিদিন হাজারের বেশি উপকারভোগী আসছে তাই আমরা তাদের প্রথমে রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড় করিয়ে একটি টোকেন দিচ্ছি। টোকেন যিনি পাচ্ছেন তিনি অবশ্যই চাল ও আটা পাবেন। আমরা কাউকে বঞ্চিত করছি না।”
এর মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাল, আটা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, “মন্ত্রণালয় ডিলার নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশোধিত নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। সেটি হাতে পেলে নতুন ডিলার নিয়োগে প্রক্রিয়া শুরু করব। ডিলার হতে আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র গ্রহণ করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হবে।”