Published : 01 Aug 2024, 07:58 PM
বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের বংশধর এবং স্বাধীনতার চেতনা ধারণকারী মানুষ মাথা উঁচু করে বসবাস করবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, “জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি চিরকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের রাজনীতি করার সুযোগ এদেশের মাটিতে আর দেওয়া হবে না।
“এই বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের বংশধরেরা এবং স্বাধীনতার চেতনা ধারণকারী কোটি কোটি মানুষ মাথা উঁচু করে বসবাস করবো।”
জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ১৯৭১ সালে তাদের পরাজয়ের পর থেকেই জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের দাবি ছিল। জাতির পিতা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন।
“কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্মম মৃত্যুর পর খুনি চক্রের মূল পুরোধা জিয়াউর রহমান, তার সঙ্গে খন্দকার মোস্তাক গং, তারা সকলে মিলে আবারো ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চালু করে। গোলাম আযমকে দেশে ফেরত আনে, জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতি করার অনুমতি দেয়, তারাই পথটি সুগম করে দেয়।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা ও প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামানের ছেলে লিটন বলেন, “দীর্ঘদিন পরও জামায়াত-শিবির তাদের অতীতের বীভৎসতা, সহিংসতা, পশ্চাৎমুখিতা থেকে সরে আসেনি। তারা হত্যা, খুন, জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।
“সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢুকে তারা আবারও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে আমাদের গর্বের ও অহংকারের স্থাপনা ভাঙচুর ও আগুনে পুড়িয়েছে। তারা গণভবনসহ স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িঘরগুলোকে টার্গেট করেছিল।
“সেই অপশক্তিকে আমরা এবারো পরাজিত করতে পেরেছি এবং সেই কারণে এবার আর বিলম্ব নয়, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি চিরকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া দরকার ছিল। সেটি হয়েছে।”
তিনি বলেন, “অতীতেও যেকোনো দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এক আহ্বানে রাজপথে চলে এসেছে। আমরা এটি বারবার প্রমাণ দিয়েছি। জামায়াত-শিবির চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে আসলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করবো। কারণ জনগণ শান্তির পক্ষে, জ্বালাও-পোড়াও এর পক্ষে নয়।”
একাত্তরে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত’ জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ চালানোর অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী জামায়াত এবং এর সকল অঙ্গ সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা জামায়াতকে ১৯৭২ সালে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহারের’ কারণে। পরে জিয়াউর রহমানের আমলে তারা রাজনীতি করার অধিকার ফিরে পায়।
দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি ছিল তখন থেকেই। চার দশক পর সেই দাবি পূরণ হল, যদিও যুদ্ধাপরাধের জন্য জামায়াতের বিচারের দাবি এখনও অপূর্ণ রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, 'সন্ত্রাসী সত্তা' ঘোষণা
জামায়াত এখন 'সন্ত্রাসী সত্তা': এর মানে কী, আইন কী বলে
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে নেত্রকোণায় মুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছ্বাস