ফরিদপুরে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
Published : 07 Dec 2024, 10:27 PM
নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা জনগণের সিদ্ধান্ত মেনে নেব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেছেন, “দুই বছর আগে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছিলাম। আত্মবিশ্বাস ছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার বিদায় নিচ্ছে। তবে আমাদের জানা ছিল না কবে বিদায় হবে।”
শনিবার ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক জেলার উদ্যোগে নেওয়া এ কর্মশালায় তারেক রহমান বলেন, “৩১ দফা অর্জনে কম বেশি তখনই করতে পারব, যখন জনগণের সমর্থন নিয়ে আপনারা সরকার গঠন করতে পারবেন। এজন্য ৩১ দফাকে জনগণের দ্বারে দ্বারে নিয়ে যেতে হবে।
“জনগণকে আস্থায় রাখতে হলে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনারা সকলে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করবেন। আপনারা প্রত্যেকে বিএনপির নেতা, অ্যাম্বাসেডর, বিএনপির প্রতিনিধি।”
বিএনপির একক আন্দোলনে স্বৈরাচার পালায়নি; সব দল ও সকল মানুষ একত্রিত হয়েছিল বলেই স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে বলে মন্তব্য করে তারেক রহমান।
নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাদের উপর জনগণের আস্থা আছে বলে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আমরা যদি চুপচাপ বসে থাকি তাহলে কোনো কাজ হবে না। আমরা এমন কোনো ভুল চিন্তা বা কাজ যেন না করি যাতে আমরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি।
“এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। তাই যারা ভুল করছে তাদের বোঝাতে হবে, সতর্ক করতে হবে। সবাইকে মিলেই আমাদের কাজ করতে হবে।”
মানুষ যদি না জানতে পারে বিএনপি কি চায়, জনগণের জন্য কি ভাবে, ছাত্রের জন্য কি ভাবে, নারীদের জন্য কি ভাবে, কৃষকের জন্য কি ভাবে, শ্রমিকের জন্য কি ভাবে, তাহলে আমাদের ওপর জনগণের সমর্থন থাকবে না বলে নেতাকর্মীদের সতর্ক করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, “হয়ত একবারে আমরা পারব না। তবে আমরা সূচনা করে যেতে চাই। পরে ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলতে থাকলে পর্যায়ক্রমে আমরা একটা জায়গায় যাব। এই প্রক্রিয়ার যুক্ত হতে চাইলে জনগণের সমর্থন দরকার।”
জনগণের কাছে নেতাদের জবাবদিহিতার কথা তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “শুধু প্রধানমন্ত্রী কিংবা সংসদ সদস্যদের জবাবদিহিতা নয় সমাজের সব পর্যায়ে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এমনকি মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল কোনো ব্যক্তি জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়।
শেখ হাসিনার সময় জবাবদিহিতা থাকলে ফরিদপুর থেকে দুই হাজার কোটি টাকা পাচার হতে পারত না বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, “হাসিনার অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও জুলুমের প্রতিবাদ হচ্ছে বিএনপির এই ৩১ দফা। এটি একটি মানবিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রগঠনের বুকলেট।”
কর্মশালায় ৩১ দফা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং তারেক রহমানের উপদেষ্টা মেহেবী আমিন বক্তব্য দেন।
কর্মশালায় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাসকুর রহমান মাসুক, মো. সেলিমুজ্জামান সেলিম, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সহ ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক নেওয়াজ হালিমা আরলী, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদারেছ আলী ইছা, সদস্যসচিব কিবরিয়া স্বপন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।