তবে জাহাঙ্গীর মাহমুদের এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা মাসুদুর।
Published : 02 Dec 2024, 12:18 AM
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক সাংবাদিকের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলির ঘটনা ঘটেছে।
রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জেলা পুলিশের সহকারী সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান।
দৈনিক কালবেলা পত্রিকার রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর মাহমুদের অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশের জেরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান তার অনুসারীদের নিয়ে বাড়িতে গুলি করেছেন।
তবে মাসুদুর রহমানের দাবি, তাকে ফাঁসানোর জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
সাংবাদিক জাহাঙ্গীর বলেন, মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন মিয়ার বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সরকার পতনের পর এর জেরে ইয়াসিন সংবাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছেন।
টাকা না দেওয়ায় ১৬ নভেম্বর ইয়াসিন তার লোকজন নিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে জাহাঙ্গীরকে মারধর করেন। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ রাসেল বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলাও করেন।
তখন থেকেই জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান ও তার অনুসারী ইয়াসিন মিয়া মামলা তুলে নিতে জাহাঙ্গীর মাহমুদকে চাপ দিচ্ছিলেন। মামলা তুলে না নিলে তাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় বলে জাহাঙ্গীরের অভিযোগ।
এ ঘটনায় গত শনিবার জাহাঙ্গীর মাহমুদ রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এর মধ্যে রোববার জাহাঙ্গীর মাহমুদকে মারধরের ঘটনায় করা মামলার দুই আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের একজনকে জামিন দিলেও অন্যজনকে কারাগারে পাঠায়। এ খবর পাওয়ার পর মাসুদ ও ইয়াসিন তাদের অনুসারীদের নিয়ে এলাকায় মোটরসাইকেল মহড়া দেন বলে অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীর মাহমুদ।
তিনি বলেন, “সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি লক্ষ্য করে একটি গুলি করা হয়। গুলির ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
তবে জাহাঙ্গীর মাহমুদের এমন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান।
রাত ১০টায় তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে এলাকার কিছু কিশোর জাহাঙ্গীর ভাইকে না বলে তার গাছের ডাব পেরে খেয়ে ফেলে। তখন জাহাঙ্গীর ভাই ওই কিশোরদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ালে আমার অনুসারী ছাত্রদল নেতা বিষয়টি মিমাংসার জন্য সেখানে যান। তখন ওই কিশোরদের ছোড়া একটি ইটের টুকরো জাহাঙ্গীর ভাইয়ের শরীরে আঘাত করে। এর জেরে তিনি এলাকার নিরাপরাধ লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যাদের অনেকে আমার অনুসারী।
“মামলার পর থেকে সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিষয়টির মিমাংসার জন্য আমি জাহাঙ্গীর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ শুনেছি, তার বাড়িতে গুলি হয়েছে। ঘটনার সময় আমি সোনারগাঁওয়ে ছিলাম। আমিও চাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক।”
জেলা পুলিশের সহকারী সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাংবাদিক জাহাঙ্গীর হামলাকারীদের কয়েকজনের নাম বলেছেন। তারা কয়েকদিন আগেও তাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ আছে। ওই ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
তবে গুলির ঘটনায় রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদী ইসলাম।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন মিয়ার বক্তব্য জানার চেষ্টা চলছে।