“পুরো শিল্পাঞ্চলে শান্তিপূর্ণ ভাবে শ্রমিকরা কাজ করছেন। শ্রমিক ও মালিকরা চাইছেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যেন কারখানা সচল থাকে।”
Published : 05 Sep 2024, 08:20 PM
গাজীপুরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করায় খুলে দেওয়া হয়েছে বেশিরভাগ তৈরি পোশাক কারখানা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দলে দলে কারখানায় আসছেন শ্রমিকরা। কারখানা এলাকায় নিরাপত্তায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ জানান, বেশির কারখানা খোলা রয়েছে। তবে কোনাবাড়ি এলাকায় একটি কারখানাসহ কয়েকটি কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইমরান বলেন, টানা কয়েকদিন শ্রমিক অসন্তোষ, বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও কারখানা ভাঙচুরের ঘটনায় গাজীপুরে অর্ধশতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিজিএমইএর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে বৃহস্পতিবার কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেন মালিকরা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে বেশির ভাগ কারখানা খোলা রয়েছে। কাজে যোগ দিয়েছেন নারী-পুরুষ শ্রমিকসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সরেজামিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন যানবাহনে ও হেঁটে শ্রমিকরা কারখানায় এসে আইডি কার্ড দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। কারখানা নিরাপত্তায় নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
কয়েকটি কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন হামলা ও ভাঙচুরের কারণে গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক ছিল। পরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করায় শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কারখানায় কাজ করছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে কোনাবাড়ি এলাকার তুসুকা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার মাসুম হোসেন বলেন, “এ এলাকায় শ্রমিকরা বিচ্ছিন্নভাবে সড়ক অবরোধ করে। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
“এ ঘটনা ছাড়া পুরো শিল্পাঞ্চলে শান্তিপূর্ণ ভাবে শ্রমিকরা কাজ করছেন। শ্রমিক ও মালিকরা চাইছেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যেন কারখানা সচল থাকে।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ বলেন, কারখানা এলাকায় নিরাপত্তায় প্রায় এক হাজার শিল্প পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা পুলিশ, মহানগর পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া বিজিবি ও সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে।
‘নৈরাজ্য রোধে’ পাহারায় বিএনপি
গাজীপুরে কারখানায় চলমান ‘বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য ঠেকাতে’ নগরীর বাসন থানা বিএনপি নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন কারখানার সামনে ও আশেপাশের এলাকায় পাহারাও দিচ্ছেন তারা।
এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে বাসন থানা এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন কারখানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি, মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয় বলে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুরুজ আহমেদ জানিয়েছেন।
গত তিনদিন ধরে নানা অজুহাতে কারখানার শ্রমিকরা ভাঙচুর, হামলা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এতে পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন কারখানা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এজন্য বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কারখানা এলাকায় টহল জোরদার করেছে।
সুরুজ আহমেদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৃহস্পতিবার বাসন থানা এলাকায় বিভিন্ন কল-কারখানা সামনে ও আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা পাহারা বসিয়েছেন। এ সব টিমে তিনিসহ বাসন থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
গাজীপুর মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক মো. আতাউর রহমান বাসন থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হোসেন বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ অন্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।