বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
Published : 16 Jul 2024, 05:12 PM
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে এক যুবকের প্রাণ গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
নিহত আবু সাঈদ (২৫) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার বাবুনপুর গ্রামে। তিনি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলনকারীদের একজন সমন্বয় ছিলেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. ইউনুস আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকাল ৪টার কিছু পর গুলিবিদ্ধ ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার আগেই মৃত্যু হয়েছিল।
“আমাদের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার জানিয়েছেন, তার বুলেট ইনজুরি ছিল। আমাদের এখান থেকে মরদেহ দিতে চায়নি। কিছু প্রসিডিউর আছে। কিন্তু সেখানে অনেক শিক্ষার্থী ছিল, তারা মরদেহ নিয়ে যায়। শুনেছি পুলিশ নাকি মরদেহ ফেরত আনার চেষ্টা করছে।”
রংপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সায়ফুজ্জামান ফারুকী বলেন, “একজন মারা গেছেন। তার পরিচয় এবং কীভাবে মারা গেছে, আমরা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা দুপুর ১টার দিকে রংপুর জেলা স্কুল মোড়ে থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। লালবাগ খামার মোড়ে শিক্ষার্থীদের আরেকটি মিছিল তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
ওই মিছিল নিয়ে তারা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে যান। তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। শিক্ষার্থীদের ঢিলের জবাবে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে।
এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যুক্ত হয়ে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। পরে আন্দোলনকারীরাও পাল্টা ধাওয়া দেয়। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সেখানে সংঘর্ষ চলছিল।
৪ সাংবাদিকের ওপর হামলা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে গেলে চার সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিকালে নগরীর পার্কের মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেইটে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান।
আহতরা হলেন- সময় টিভির রংপুর জেলার প্রতিবেদক রেদোয়ান হিমেল, আব্দুর রশদি জীবন, ক্যামেরা পারসন তরিকুল ইসলাম ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি আফতাবুজ্জামান হীরু।
রেদোয়ান হিমেল বলেন, “আমাদের ক্যামেরা পারসন ছবি ও আন্দোলনের ভিডিও করছিলেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা তাদের কাজে বাঁধা দেন এবং মারধর করেন।
“সেটা দেখে আমরা এগিয়ে গেলে আমাদের ওপরও হামলা করা হয়। পরে আমরা সেখান থেকে চলে আসি।”
বিকাল সাড়ে ৪টার পর থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর আর কোনো সাংবাদিকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না বলে জানান সাংবাদিক আফতাবুজ্জামান হীরু।