ঋণের চাপে স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করেন আলী: পুলিশ

ময়মনসিংহে দুই সন্তানসহ গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের দুই দিন পর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ময়মনসিংহের ত্রিশালে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যার ঘটনায় আলী হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে হতাশার এক পর্যায়ে আলী হোসেন স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আলী হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য দিয়েছেন বলে জানান ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শামীম হোসেন।

বুধবার বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুর বাজার এলাকা থেকে আলী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তিনি ত্রিশালের রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম হোসেন বলেন, আলী হোসেন ২০১২ সালে হওয়া একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় পাঁচ বছর জেল খেটে ২০১৭ সালের অগাস্টে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

“২০১৯ সালে দিনমজুর আলী হোসেন তার মামাত বোন আমেনা খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে আবু বক্কর সিদ্দিক ও আনাছ নামে দুটি সন্তানের জন্ম হয়। চার সদস্যের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। সম্প্রতি আলী হোসেন একটি এনজিও থেকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন।

“ওই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় প্রায়ই তাদের অপমান করা হত। এক পর্যায়ে হতাশ হয়ে আলী হোসেন স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। এর মধ্যে ১৬ মে রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়।

“রাতে স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন আলী হোসেন। এরপর সেই ওড়না দিয়ে ঘুমন্ত দুই সন্তানকে হত্যা করে বাড়ির পাশে তিনজনকে মাটিতে পুঁতে রেখে পালিয়ে যান।”

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- আমেনা খাতুন (৩০), আবু বক্কর সিদ্দিক (৪) ও আনাছ (২)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় আমেনা খাতুনের মা হাসিনা খাতুন বুধবার ত্রিশাল থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে গাজীপুরের শ্রীপুর বাজার থেকে আলী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাইমেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফাল্গুনী নন্দী, সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. ফারুক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:

শিয়াল টেনে বের করল শিশুর লাশ, পরে মিলল আরও দুই মরদেহ

ময়মনসিংহে সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার পর পুঁতে রাখেন স্বামী, ধারণা পুলিশের