২০২০ সালে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুনামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
Published : 30 Mar 2023, 09:08 PM
সিলেটের গোলাপগঞ্জে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিলেটের জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি নিজাম উদ্দিন জানান।
দণ্ডিত আতিকুর রহমান রাহেল গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুনামপুর গ্রামের আবদুল করিম খান ওরফে ঠাকুর মনার ছেলে। রায় ঘোষণাকালে তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, আতিকুর রহমান রাহেলরা তিন ভাই ও তিন বোন। বোনদের বিয়ে দেওয়ার পর ভাইয়েরা একই বাড়িতে পৃথকভাবে বসবাস করে আসছিলেন। পৈত্রিক সম্পদ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাদের বাবাকে নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যে সম্পদ ভাগবাটোয়ারা করে দেন। কিন্তু মেজ ছেলে আতিকুর রহমান রাহেল বাড়ির দক্ষিণে একখণ্ড জমি তার নামে লিখে দিতে বাবাকে চাপ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সকাল ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে আতিকুর রহমান রাহেল তার বাবা আব্দুল করিম খানকে নিয়ে বাড়ির দক্ষিণে ক্ষেতের জমির পাশে লাগানো গাছবাগানে গাছপালা কাটতে নিয়ে যান। সঙ্গে মা মিনারা বেগমও যান। কিছুক্ষণ পর আতিকুর বাবাকে আবার জমি লিখে নিতে চাপ সৃষ্টি করেন। তাতে মা মিনারা বেগম বাধা দিলে আসামির হাতে থাকা কোদাল দিয়ে মাকে কোপ দেন। তখন তার বাবা এগিয়ে গেলে কোদালের আঘাত তার মাথায় লাগে এবং তিনি ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এরপর মা মিনারা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে চিকিৎসার কিছুদিন পর মিনারা বেগমকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। এর দুদিন পর তিনিও মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের আরেক ছেলে দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ওই বছরের ২৮ মার্চ আতিকুর রহমান রাহেলকে একমাত্র আসামি করে গোলাপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) এসআর পিন্টু সরকার ২৮ মার্চ দিনগত ভোররাতে মৌলভীবাজারের বড়লেখা সৎপুর গ্রাম থেকে আসাসিকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তিনি আদালতে হত্যাকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে জবানবন্দি দেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা মিনারা বেগমও পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) এসআর পিন্টু সরকার তদন্ত শেষে একমাত্র আসামি আতিকুর রহমান রাহেলকে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি অত্র আদালতে বিচারের জন্য এলে ২০২২ সালের ২০ জুন অভিযোগ গঠনের পর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
রায়ে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন।
মামলায় আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ।