“রৌমারীতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। সমাবেশে যাদের আসার কথা ছিল, তারা আসেননি”, বলেন রৌমারী থানার ওসি।
Published : 29 Nov 2024, 10:07 PM
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় জামায়াতের হামলা-ভাঙচুরের মুখে কৃষক সমাবেশ পণ্ড হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারা।
হামলায় আহত হয়েছেন লেখক ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি নাহিদ হাসান নলেজ, ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের মামলার প্রধান আইনজীবী রায়হান কবিরসহ পাঁচজন।
শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে নাহিদ হাসান নলেজ জানান।
প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিকাল ৫টায় উপজেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ইউএনও, ওসি ও সহকারী পুলিশ সুপার (রৌমারী সার্কেল) এর অপসারণসহ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ হাসান নলেজ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের প্রধান আইনজীবী রায়হান কবির বক্তব্য দেন।
এ সময় বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, উপজেলা রাষ্ট্র সংস্কারের আন্দোলনের নেতা মিজানুর রহমান মিনু ছিলেন।
নলেজ সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, “পুলিশের আচরণ দেখে মনে হয়েছে, তারা আগে আওয়ামী লীগের কথা শুনতেন। এখন জামায়াত-শিবিরের কথা শুনছেন।”
হামলায় স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করে তিনি বলেন, “এখানকার সার্কেল এএসপি, ইউএনও এবং ওসি আছেন তাদের চরম দায়িত্বহীনতা ছিল।”
এই তিনজনকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে ও হামলায় নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “পুলিশের সামনেই জামায়াত-শিবিরের লোকজন সমাবেশে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় আমাকেও আঘাত করা হয়।”
এ ছাড়া মারপিট করে আহত করা হয় জুলাই আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের প্রধান আইনজীবী ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির ন্যায়পাল রায়হান কবির, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, উপজেলা রাষ্ট্র সংস্কারের আন্দোলনের নেতা মিজানুর রহমান মিনু ও এসএম শাহ্ মোমেনকে।
রৌমারী উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী বলেন, “এই কৃষক সমাবেশে কোনো কৃষক ছিলেন না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাউকে ডাকা হয়নি। রাষ্ট্রের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদেরও ডাকা হয়নি। এ কারণে প্রশাসন তাদের মঞ্চ ভেঙে দেয়।
“তারপরও সমাবেশ করতে চাইলে সাধারণ জনতা হামলা চালায়।”
তাদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের দু-একজন থাকতে পারে বলে হায়দার আলী স্বীকার করেন।
পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের দোসর ইসকনের মত লোক জড়ো করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা ছিল সমাবেশকারীদের।”
তবে সমাবেশে হামলার ঘটনা অস্বীকার করে রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, “রৌমারীতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল, সেটার বিপক্ষে ছিল জামায়াত-বিএনপি। সমাবেশে যাদের আসার কথা ছিল, তারা আসেননি। এ কারণে সমাবেশও হয়নি।”
সমাবেশে হামলার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমাবেশই তো হয়নি।”
তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, “তারা কি সমাবেশের অনুমতি নিয়েছিল?”