বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলায় নিহতের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় এখন পর্যন্ত সাতটি হত্যা মামলা করেছেন স্বজনরা।
Published : 05 Sep 2024, 11:36 AM
ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহতের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
নিহত শিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুমের ভাই মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে বুধবার রাতে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. রুহুল আমিন।
মাহবুবুল হাসান মাসুম ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের নোমান হাসানের ছেলে। তিনি ছাগলনাইয়ার আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ওসি জানান, মাসুম হত্যা মামলায় আসামিদের তালিকায় দুই নম্বরে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এরপর রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ফেনী-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীকে যথাক্রমে চার ও পাঁচ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া মামলায় ১৬২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ অগাস্ট ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিবর্ষণে মাহবুবুল আলম মাসুমের মাথা, বুকে ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হন।
এরপর তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল হয়ে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭ অগাস্ট তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, প্রথম চারজন আসামির প্ররোচণা, উস্কানি এবং নির্দেশে ৫ নম্বর আসামি অপরাপর আসামিদের নিয়ে শহরের মহিপালে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে নির্বিচারে গুলি এবং হামলা করে মাসুমকে হত্যা করে।
পুলিশ জানায়, ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলায় ঘটনাস্থলে এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৯ জন মারা গেছেন।
এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় এখন পর্যন্ত সাতটি হত্যা মামলা করেছেন নিহতদের স্বজনরা। এসব মামলায় আসামি হয়েছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এজহার নামীয় প্রায় এক হাজার জনসহ মোট আসামি হয়েছে ২ হাজার ৫৮৬ জন।
ওসি মো. রুহুল আমিন বলেন, এসব মামলায় এখন পর্যন্ত নিজাম উদ্দিন হাজারীর পিএস পরিচয় দেওয়া মানিকসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছে।