শেরপুরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, অপসারণ দাবি

‘জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজ দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও সচেতন এলাকাবাসী’র ব্যানারে বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

শেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2023, 10:38 AM
Updated : 26 May 2023, 10:38 AM

শেরপুরে একটি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

জেলা সদরে ‘জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজ দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও সচেতন এলাকাবাসী’ বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

কর্মসূচিতে ছিল জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার অপসারণের দাবিতে পদযাত্রা, সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।

কর্মসূচি থেকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদ্য নিয়োগ পাওয়া সভাপতির পদত্যাগও দাবি করা হয়।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনালের নেতৃত্বে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি শহরের গুরুত্বর্পূণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

পরে এখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, কলেজের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আব্দুছ ছাত্তার, স্থানীয় রণজিৎ চন্দ্র দে, আব্দুল করিম ও খোকন নন্দী বক্তব্য দেন।

সমাবেশ শেষে কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার অপসারণের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুকতাদিরুল আহমেদের কাছে দেওয়া হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০০১ সালে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কুসুমহাটি এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন তার বাবার নামে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। মিনহাজ সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালে কলেজটি পর্যায়ক্রমে ডিগ্রি ও অনার্স কোর্স চালু হয়।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, বর্তমান অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কলেজটি আজ ধ্বংসের পথে। অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনালের স্বাক্ষর জাল করে কলেজের অন্তত ৪০ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন।

ভর্তিবাণিজ্য করে এবং পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় নির্ধারিত ফির চেয়েও অধিক অর্থ নিয়ে আত্মসাত করেছেন এবং শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছেন বলেও স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগ করা হয়, অনেক শিক্ষককে পদোন্নতিবঞ্চিত করে অর্থের বিনিময়ে অন্য শিক্ষক-কর্মচারীকে পদোন্নতি দিয়েছেন। ব্যাংক হিসাবে লেনদেন না করে কলেজের অভ্যন্তরীণ আয়ের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া নিজের অনিয়ম ঢাকতে অন্য এলাকার বাসিন্দাকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বানিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

স্মারকলিপিতে আরও অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে কলেজের লেখাপড়ার মানও খারাপ। আগে যেখানে কলেজে পাশের হার ছিল ‘শতকরা ৯৬ ভাগ’, সেখানে ২০২২ সালে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ‘শতকরা ২৩ ভাগে’।

কলেজের সুনাম ফিরিয়ে আনতে অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার অপসারণের দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা বলেন, ২০১০ সালে তিনি (শহীদুল) কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। আর ২০১৮ সালে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকেই মিনহাজ উদ্দিন মিনাল সামাজিকভাবে তাকে (শহীদুল) হেয় প্রতিপন্ন ও তার সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মনগড়া অভিযোগ করে আসছেন।

জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।