সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি বলেন, ওই নারী প্রকৃত আসামিদের পরিবর্তে অন্যদের আসামি করতে এসেছিলেন।
Published : 10 Jan 2025, 12:01 AM
সিলেটে এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. জিয়াউল হক বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, ওই নারী (২৩) শনিবার রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি মঙ্গলবার রাতে মামলা করতে আসেন।
“তিনি মূল আসামিদের প্ররোচনায় তাদের আড়াল করে অন্যদের নামে মামলা করতে এসেছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলে পরে প্রকৃত অপরাধীদের আসামি করা হয়। ওই রাতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।”
ওসি বলেন, বুধবার আসামিদের মধ্যে নুরুল আমিন মোজাম্মেল নামে একজন অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- নুরুল আমিন মোজাম্মেল (২৫), মো. রায়হান আহমেদ (৩৬), মো. কবির মিয়া (৪২) এবং ফারজানা আক্তার (২২)।
মামলার বরাতে পুলিশ জানায়, ওই নারী সিলেট নগরীর একটি দরজির দোকানে কাজ করেন। খালাত বোনের মাধ্যমে তার রায়হান আহমেদের সঙ্গে পরিচয় হয়। রায়হান পেশায় আইনজীবী সহকারী। খালাত বোনের অনুরোধে তিনি মাঝে মাঝেই মোবাইলে রায়হানের সঙ্গে কথা বলতেন।
১ জানুয়ারি নগরীর মীরাবাজার মজুমদারপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন ওই নারী, তার খালাত বোন ও রায়হান। শনিবার সন্ধ্যায় সেই বাসায় আসেন কবির মিয়া (৪২), মো. নুরুল আমিন মোজাম্মেল (২৫) ও অজ্ঞাত আরও এক ব্যক্তি।
ওই নারীর খালাতো বোন ও রায়হান ওই ব্যক্তিদের চা-নাশতা খাওয়ান। কিছুক্ষণ পরে খালাতো বোন ও রায়হান ঘরের বাইরে চলে যান। তখন দরজার ছিটকিনি দিয়ে তিন ব্যক্তি ওই নারীকে ধর্ষণ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। রোববার তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করানো হয়।
তখন প্রকৃত অপরাধীরা ওই নারীকে জানান, তাদের কথামতো চললে তাকে টাকা দেওয়া হবে। এরপর তারা মোবাইল ফোনে কয়েকজনের ছবি দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়।
সেই পরামর্শ অনুযায়ী, ওই নারী ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন এমন কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করতে মঙ্গলবার কোতোয়ালি মডেল থানায় যান।
এ সময় তার কথাবার্তা ও আচরণ ওসি জিয়াউল হকের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। পরে ওসি এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) কামরুল ইসলাম ওই নারীর সঙ্গে আলাপ করলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসে। এরপর প্রকৃত অপরাধীদের আসামি করেই মামলা নেয় পুলিশ।