আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান বাদীর আইনজীবী।
Published : 14 Sep 2024, 01:14 AM
কুমিল্লার মুরাদনগরে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে।
মামলার প্রভাবশালী প্রধান আসামির বিরুদ্ধে বাদীপক্ষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
মামলার প্রধান আসামি শেখ আক্তার হোসেন মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা এলাকার বাসিন্দা। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার ভাই।
শিশুটির পরিবারের দাবি, আক্তার বিভিন্নভাবে তাদের হুমকি দিচ্ছেন; এতে তারা আতঙ্কে রয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেছেন শিশুটির বাবা।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
আইনজীবী বলেন, শিশুটি বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিকটিম সার্পোট সেন্টারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়, শিশুটি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ৩৫ বছর বয়সি আক্তার হোসেন প্রায়ই শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দশ বছর বয়সি শিশুটি বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে পাশের বাড়িতে যায়।
তখন ওই বাড়ির গৌর মনি বিশ্বাস শিশুটিকে ডেকে তার ঘরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন শেখ আক্তার ও তার সহযোগী শামু চন্দ্র নট্ট।
এক পর্যায়ে ওই বাড়ির নারী শিশুটিকে আক্তারের কাছে নিয়ে যান। তখন শামু চন্দ্রকে পাহারায় রেখে আক্তার শিশুটিকে ধর্ষণ করেন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, পরে শিশুটি বাড়ি গিয়ে ঘটনাটি তার বাবা-মাকে জানালে তারা মেয়েকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবার করা মামলায় শেখ আক্তার ছাড়াও গৌর মনি বিশ্বাস ও শামু চন্দ্র নট্টকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও এলাকায় আসামিদের প্রভাব এখনো রয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমি চরম আতঙ্কে দিন পার করছি। আমি নিরীহ মানুষ, আমি আমার মেয়ের সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার চাই।”
আইনজীবী আতিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পর থেকে মামলার প্রধান আসামি এবং তার লোকেরা নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। মামলা করলে তাদের এলাকা ছাড়া করার ভয় দেখাচ্ছেন। আমরা মামলার আরজিতে বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি।”
এ বিষয়ে জানতে শেখ আক্তার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদালতে মামলা হওয়ার পর তিনি এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে পিবিআই, কুমিল্লার এসপি মো. মিজানুর রহমান বলেন, “মামলার কপি এখনো আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। কপি পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”