“আমার তিনটা পুকুর ডুবে গেছে দুই রাইতের বৃষ্টির পানিতে। পুকুরগুলোতে যে মাছ ছিল প্রায় সবই বের হয়ে গেছে।”
Published : 08 Oct 2023, 06:50 PM
নেত্রকোণায় প্রধান নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে তিন দিনের অতিবৃষ্টিতে সাত শতাধিক পুকুর ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা।
রোববার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহজাহান কবীর বলেন, “৫০৩ জন চাষির ১৭৬ হেক্টরের ৭০৫টি পুকুর থেকে মাছ ও পোনা মিলিয়ে ৪০০ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে।
“বৃষ্টিতে পুকুরের প্রায় ১৮ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত ছাড়াও আট কোটি ১৫ লাখ টাকার মাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে খামারিদের।”
এদিকে টানা তিনদিন পানি বাড়ার পর রোববার থেকে কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো।
সকালে পাউবোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, “বৃষ্টি কমে আসায় উব্ধাখালি নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে শনিবারের চেয়ে কমেছে। আজ বিপৎসীমার মাত্র শূন্য দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে বইছে। এ ছাড়া সোমেশ্বরী, কংশ ও ধনু নদীর পানিও দ্রুত কমছে।”
টানা বৃষ্টিতে মাছের খামারিদের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে উল্লেখ করে সদর উপজেলার বহ্নি গ্রামের মৎস্য চাষি নির্জর ইসলাম বলেন, “আমার তিনটা পুকুর ডুবে গেছে দুই রাইতের বৃষ্টির পানিতে। পুকুরগুলোতে যে মাছ ছিল প্রায় সবই বের হয়ে গেছে। আমার প্রায় সাত লাখ টাকার মাছ চলে গেছে।
ঋণের টাকায় খামার করেছিলেন জানিয়ে নির্জর বলেন, “অহন কিবায় আবার মাছ চাষই করবাম আর কিবায় ধারের টাকা শোধ করবাম। ভাইব্যা কিছুই কুল-কিনার করতাম পারতাছি না।”
একই উপজেলার মদনপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত চাষি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “তিন দিনের ভারি বৃষ্টিতে আমার সব শেষ। কাইঞ্জা বিলের পানি উপচে চাষের পুকুর ডুবে গেছে। পুকুরগুলো অন্তত দুই হাত পানির নীচে। বিলে একটা খাল আছে। এই খাল খনন করলে এই দশা অইতো না। খাল দিয়া পানি বাইর অইয়া যাইতো।
“আমার মতো গ্রামের আরও অন্তত পাঁচজনের মাছ পানিতে ভাইস্যা গেছে। আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি অইছে। আমরারে সরকার সহযোগিতা না করলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়বে।”
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহজাহান কবীর বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সহায়তা দিতে এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”