এক পাশে বিক্ষোভ করায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
Published : 17 Jan 2025, 06:12 PM
বকেয়া বেতনসহ দীর্ঘদিনের বিভিন্ন পাওনা পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন।
শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় দুই শতাধিক শ্রমিক সড়কে অবস্থান নিয়ে তাদের সাত মাসের বকেয়া বেতনসহ অন্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ বলেন, “মহাসড়কের এক পাশে বিক্ষোভ করায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।”
শ্রমিকদের দাবি, তাদের অনেকে ২০০৬ সাল বা তারও আগে থেকে এ কারখানায় চাকরি করছেন। গত ৭ মাস ধরে বকেয়া বেতনসহ প্রভিডেন্ট ফান্ড, সার্ভিস বেনিফিটের টাকা পাননি তারা। অনেক কর্মী কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকাও পাওনা রয়েছে।
বেতন-ভাতা না পাওয়ায় তাদের মানবেতর জীবনে পার করতে হচ্ছে। বার বার মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা ভঙ্গ করছে। বাধ্য হয়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
কারখানার মেকানিক্যাল সেকশনের উপ ব্যবস্থাপক সবিমল ঘোষ বলেন, “২০১১ সাল থেকে আমি ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড কারখানায় যোগদান করি। বকেয়া বেতন না পওয়ায় আমরা স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং সার্ভিস বেনিফিটের পওনাও বাকি রয়েছে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রত্যেক জিনিসপত্রের চড়া দাম থাকায় নিয়মিত কাঁচা বাজরসহ আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র কেনা দুষ্কর হয়ে পড়ছে।”
তিনি বলেন, “শুনেছি, সরকার আমাদের বকেয়া পরিশোধের জন্য ডার্ড কোম্পানিকে ১৩ কোটি টাকা লোন দিয়েছে। কিন্তু আমাদের ন্যায্য পাওনা তারা পরিশোধ করছে না।”
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর মহানগর সভাপতি শফিউল আলম বলেন, “২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন মালিকপক্ষ। কারখানারটি বন্ধ হওয়ার দিন পর্যন্ত প্রায় আট হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত ছিলেন।”
তিনি বলেন, “শ্রমিকদের কর্মকালীন সময়ের কয়েক মাসের বেতন ও বন্ধকালীন সময়ের আইনানুগ পাওনা পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ে ২৮ নভেম্বর শ্রম আইনের সুবিধা থেকে কমিয়ে এনে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, সরকার থেকে পাওনা লোনের ১৩ কোটি টাকা পরিশোধ করার কথা রয়েছে। এর পরও ১৪ কোটি টাকা পাওনা থাকবে গাজীপুরের ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকদের।”
মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বেতন পরিশোধে সাময়িক বিলম্ব হয়েছে। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
ডার্ড গ্রুপের চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার ফয়েজ আহমেদ বলেন, “আমরা ইতোমধ্যেই শ্রমিকদেরকে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। একসাথে সব টাকা পরিশোধ করা যায় না। বাকি টাকা অবশ্যই পরিশোধ করে দিব।”
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ বলেন, “প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে।”